রাজশাহী প্রাচীনতম স্কুলের প্রথম পুনর্মিলনী

ই-বার্তা ।।  ফারহানা মোবিন (চিকিৎসক ও লেখক)।।  ১৯৯৮ সালের ব্যাচ, সরকারি পি.এন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহী।

 

পুনর্মিলনী মানে হলো- আনন্দ আয়োজন। নির্দিষ্ট কয়েক বছরের শিক্ষার্থী বা অসুনারীদের পুরানো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কর্মস্থলে একত্রিত হওয়াকে বলে পুনর্মিলনী।

 

আগামী ১৫ই ডিসেম্বর রাজশাহীর সরকারী পি.এন (প্রমথনাথ) বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে দেড়শত বছরের পূর্তি অনুষ্ঠান।

 

এই স্কুল রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে প্রাচীনতম ও বিখ্যাত স্কুল। আজ থেকে দেড়শত বছর পূর্বে নাটোরের দিঘাপতিয়ার রাজা প্রমথনাথ রায় ১৮৬৮ সালে এই স্কুলের জন্য ৬ হাজার রুপি দান করেন। তাঁর নামানুসারে এই স্কুলের নাম করণ হয় “সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। বাংলাদেশের বড় স্কুলের মধ্যে এটি একটি স্কুল। মেধা তালিকার কঠিন লড়াইয়ে টিকতে হয় এই স্কুলে।

 

এই স্কুলে লেখাপড়া করেছেন হাজারো মেধাবী, যারা আজ দেশবিদেশের নামী দামী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এ স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন বিখ্যাত লেখিকা, বাংলা একাডেমীর সাবেক পরিচালক এবং শিশু একাডেমীর চেয়ারম্যান সেলিনা হোসেন, তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শিরিন সুফিয়া বেগম, তত্বাবধায় সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সুফিয়া রহমানসহ অগণিত প্রতিভাবান মেধাবী ছাত্রী।

লেখক সেলিনা হোসেন।
তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।
মাকসুদা আনাম শিলু (প্রধান আয়োজক)
তৌহিদ আরা ইরানী (প্রধান শিক্ষিকা, ১৯৮০ সালের ব্যাচ)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আগামী  ১৫ই ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে  প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। আয়োজকেরা হলেন- ১৯৮৮ সালের (এস.এস.সি) ছাত্রীরা। আয়োজকদের অন্যতম মাকসুদা আনাম শিলু এই প্রতিবেদককে জানান, “আমি দীর্ঘ দিন থেকে এমন একটা পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের স্বপ্ন দেখছিলাম। পরে আমার এই ইচ্ছার কথা পি.এন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তৌহিদ আরা ইরানী ম্যাডাম ও আমার কিছু বান্ধবীদেরকে বলার পরে সবাই স্বানন্দে রাজী হন। ফেইসবুকে পোষ্ট দেওয়ার পরে আমি ব্যাপক সাড়া পাই। দীর্ঘ কয়েক মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ ও এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অসংখ্য জনের সহযোগীতার জন্য আমরা এই আয়োজন করতে পেরেছি। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাক্তন ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ আনুমানিক প্রায় ২৩০০ জন উপস্থিত থাকবেন। ১৫ই ডিসেম্বরে সকাল ৮.০০ ঘটিকা থেকে শুরু হবে আমার কার্যক্রম। পরিস্থিতি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করি অনুষ্ঠান সফল হবে”।

 

১৯৯৮ ব্যাচের জেসমিন সুলতানা রুনা এবং তাসকিনা নাজনীন উর্মি বলেন, “আমরা ফেসবুকে ১৯৯৮ সালের ছাত্রীদেরকে এক জায়গায় করার জন্য পেইজ খুলেছি। আমাদের অনেকেই দেশের বাহিরে আছেন। অনেক জন এই পুনর্মিলনী উপলক্ষ্যে দেশে আসবেন। আমরা একই রঙের শাড়ী পড়ব। আমরা প্রত্যেকেই বিভিন্ন পেশাতে নিয়োজিত। সবাইকে এক জায়গায় করবার জন্য আমাদেরকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আমরা আপনাদের সকলের দোয়া প্রার্থী”।

 

ব্যাচ ১৯৯৮

স্কুলের নিজস্ব ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই পুনর্মিলনী। ১৫ই ডিসেম্বর ২০১৭ সকাল ৮.৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে র‍্যালি, এরপর জাতীয় সংগীত, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন, থীম সংগীত। ১০ টায় রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী খাবার কলাই এর রুটি (ডাল দিয়ে তৈরি রুটি) দিয়ে শুরু হবে সকালের নাস্তা। বিশাল ষ্টেজে চলতে থাকবে বৃক্ততা, স্মৃতিচারণা, নাচ, গান, গম্ভীরা, বিভিন্ন ব্যাচের ছাত্রীদের আকর্ষণীয় সব আয়োজন। এখানে এই উদ্দেশ্যে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে আইডি কার্ড বিতরণ। বিভিন্ন ব্যাচের ছাত্রীরা নিজেদের পছন্দ মত পোশাক এবং সাজার জিনিসের আয়োজন করেছেন। যেমন- ১৯৯৮ সালের ব্যাচের আনুমানিক ৩০০ জন ছাত্রী নিজেদের পছন্দ মত একই রঙের শাড়ী পড়বেন। নামাজের সময়গুলোতে থাকবে অনুষ্ঠানের বিরতী। অনুষ্ঠান চলবে সন্ধ্যা ৯.০০ টা পর্যন্ত। রাতের খাবারের পরে ঘোষণা করা হবে অনুষ্ঠানের সমাপ্তী।