মানবতাবিরোধী অপরাধের আসামীর পক্ষে এমপি রনজিৎ কুমার রায়

ই-বার্তা ।। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বর্তমানে কারাগারে আটক বাঘারপাড়ার রাজাকার আমজাদ মোল্যার বিপক্ষে মামলার বাদি ও স্বাক্ষীরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতার হওয়া আমজাদ মোল্লার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ায়, স্থানীয় সাংসদ সদস্য রনজিৎ কুমার রায়য়ের  সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলা, পুলিশের তান্ডর ও মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে সংবাদ সন্মেলন ও মানববন্ধন করেছে মানবতা বিরোধী অপরাধ মামলার সাক্ষী ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

আমজাদ মোল্যা পক্ষীয় সন্ত্রাসীদের হামলা ও হুমকির মুখে রয়েছেন  তারা। একই সাথে সন্ত্রাসীরা তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। স্থানীয় পুলিশ ও সংসদ সদস্য এই সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় মানবতাবিরোধী মামলার বাদী ও সাক্ষীদের অনেকে বাড়িতেও থাকতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তারা বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের নিরাপত্তা দাবি করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আমজাদ রাজাকারের বিরুদ্ধে হওয়া মানবতাবিরোধী মামলার স্বাক্ষী প্রেমচারা গ্রামের এলিয়ার মোল্যার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আলাউদ্দিন। সংবাদ সন্মেলনে তারা বলেছেন স্থানীয় সাংসদ সদদ্যের সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলা, পুলিশের তান্ডর ও মিথ্যা মামলা থেকে আমরা বাঁচতে চাই। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমজাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকে মামলার বাদি ও সাক্ষীর পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে। আর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে আমজাদের সন্ত্রাসী বাহিনী একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে। সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের যৌথ হামলায় এহিয়া মোল্যার ভাগ্নে ফজের মোল্যা, ভাইপো আইয়ুব হোসেন ও মাহাবুর রহমানসহ ১০/১৫ জন আহত হন। ২৬ জানুয়ারি সন্ত্রাসীরা মামলার সাক্ষী ও তার ভাইপো জহিরের উপর হামলা করে।

ঘর বাড়ি ভাংচুর করেচে সন্ত্রাসী বাহিনী।

এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি প্রেমচারা গ্রামের বাড়িতে ঢুকে সন্ত্রাসীরা এহিয়ার আত্মীয় সুমন ও তার মাকে হত্যাচেষ্টা করে। এসময় বাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি সন্ত্রাসীরা দুইটি ঘর ও একটি বিছালি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা ঘর থেকে নগদ ৮০ হাজার টাকা লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালংকার, তিনটি গরু লুট করে। এতে বাধা দিতে গেলে সুমন ও তার মা মনিরা বেগমকে মারপিট করে গুরুত্বর আহত করা হয়। সন্ত্রাসীরা চলে গেলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এছাড়া গত ২৯ এপ্রিল সন্ত্রাসীরা মামলার বাদির দোকানে হামলা চালায়। আর গত ১৮ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খান প্রেমচারা গ্রামে আসলে স্বাক্ষী দিতে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হন এহিয়ার। এসময় তদন্ত কর্মকর্তা নিজেই পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করেন। কিন্তু এব্যাপারে স্থানীয় পুলিশ কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নিয়ে সন্ত্রাসী তথা যুদ্ধাপরাধী আমজাদ মোল্যার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য রনজিৎ কুমার রায়ও আমজাদ মোল্যার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এজন্য সন্ত্রাসীদের আটক না করে পুলিশ উল্টো বাদি ও স্বাক্ষীর পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা ও হয়রাণিমূলক মামলা করেছে। এসব ঘটনায় আমজাদ মোল্যার বিপক্ষে মানবতাবিরোধী মামলার বাদি ও স্বাক্ষী পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এজন্য তারা সরকারের কাজে নিরাপত্তা দাবি করেন।

এসময় মামলার বাদি খোকন বিশ্বাস, ডা. বিএম রুহুল আমিন, আবুল হোসেনসহ এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।