ডিম্বাশয় ক্যান্সারের লক্ষণগুলো জেনে নিন

লাইফস্টাইল ডেস্ক।।ওভারিয়ান ক্যান্সার বা ডিম্বাশয় ক্যান্সার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে একসময় চিকিৎসা সীমার বাইরে চলে যায়।ডিম্বাশয় ক্যান্সারকে নীরব ঘাতক বলা যেতে পারে কারণ এর লক্ষণগুলো দিয়ে সহজে বোঝা যায় না।তাই এই রোগের লক্ষণগুলো জেনে নেয়া জরুরি এবং দৈনিন্দিন জীবনে এসব লক্ষণ আছে কি না বুঝে যথাসময়ে চিকিৎসকের চিকিৎসা হওয়া উচিত। 

 

ডিম্বাশয় ক্যান্সারের ৯টি পুর্ব লক্ষণ ক্ষুধামান্দ্যঃওভারি বা ডিম্বাশয় ক্যান্সারের অন্যতম লক্ষণ হল হঠাৎ করে ক্ষুধা বেশ কমে যাওয়া। ডিম্বাশয়ে ক্যান্সার হলে মানুষের স্বাভাবিক মেটাবলিজম বা খাদ্য হজম প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে করে খাবার ভেঙ্গে তা থেকে শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যহত করে। ফলে ক্ষুধা কমে যায়।ঘন ঘন প্রসাব পাওয়াঃস্বাভাবিকের তুলনায় ঘন ঘন বা হঠাৎ করে তীব্র প্রসাবের বেগ পেলে তা ডিম্বাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। বাথরুমে যেতে যেতে প্রসাবের বেগ সামলানো কঠিন হতে পারে অনেকসময়। শুধু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেই নয়, ডিম্বাশয় ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও ধীরে ধীরে কয়েক সপ্তাহের মাঝে প্রসাবের বেগ সামলানো কঠিন হয়ে যায়।তলপেটে ব্যাথাঃবদহজম বা পিরিয়ড থেকে কিছুটা ভিন্নরকম পেটব্যাথা বা পেলভিক এরিয়ায় ব্যাথা অনুভূত হলে সেটা ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে তারা পিরিয়ড, ডায়রিয়া বা স্টমাক ফ্লু ছাড়াই দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তীব্র পেট ব্যাথায় ভুগেছে।অল্প খেলেই ভরপেটের অনুভূতিঃডিম্বাশয় ক্যান্সারের এডভান্স লেভেলে ক্যান্সার আক্রান্ত টিউমার পেটের অনেকটা জায়গাজুড়ে থাকে। টিউমার অনেকসময় ওমেনটাম (পেটের ফাঁকা জায়গায় থাকা ফোল্ড যা শরীরের অন্যান্য অঙ্গের সাথে পেটের সংযোগ ঘটায়), ইনটেসটাইন বা নাড়িভুঁড়িতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে করে রোগীর খাওয়া শুরু করতেই বা অল্প খেলেই ভরপেটের অনুভূতি হয়।ভরপেটের অনুভূতি শুধু ডিম্বাশয় টিউমারের জন্যই নয়, হজমে সমস্যার জন্যও হতে পারে। নিয়মিত বদহজম, গ্যাস, বমি বমি ভাব ছাড়াও গ্যাস্ট্রো-ইনটেস্টিনাল নানা সমস্যা যেমন, হার্টবার্ন বা বুক জ্বালাপোড়া করার সমস্যাও ডিম্বাশয় ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত সিম্পটম হিসেবে দেখা যায়।

 

ব্লোটিং বা পেট ফাঁপাঃপেটফাঁপা, পেটে বা পেলভিস এরিয়ায় গ্যাসের ঘন ঘন ব্যাথা হওয়া ডিম্বাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এমন যদি হয় যে নতুন কোন ফিজিক্যাল এক্টিভিটি বা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ছাড়াই হঠাত করে পোশাক পেটের দিকে টাইট লাগতে শুরু করে সেটা ব্লোটিঙের কারণে হতে পারে। এমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। হতে পারে সেটা ডিম্বাশয় ক্যানসারের লক্ষণ।লোয়ার ব্যাক পেইনঃঅনেকসময়ই লোয়ার ব্যাকে বা কোমরের নীচের দিকে একটানা একটা ভোঁতা আর চিনচিন করা ব্যাথা হতে থাকলে তা ডিম্বাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। অনেক ডিম্বাশয় ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলার ক্ষেত্রে লেবার পেইনের ব্যাথার মত ব্যাথা অনুভুত হয়েছে লোয়ার ব্যাকে।কখনও কোষ্ঠ্যকাঠিন্য কখনও ডায়রিয়াঃওভারিয়ান বা ডিম্বাশয় ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কখনো কোষ্ঠকাঠিন্য আবার কখনও ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটা হয় যখন ডিম্বাশয়ের টিউমার ফুলে উঠে পেট, বাওয়েল বা অন্ত্র, ব্ল্যাডার বা মূত্রথলিতে চাপ দিতে থাকে। তাই নিয়মিতই যদি কোষ্ঠকাঠিন্য আর ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসকের কাছে যেতে ভুলবেন না যেন।

 

হঠাৎ ওজন কমতে শুরু করাঃখাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ কিংবা এক্সারসাইজ ছাড়াই হঠাৎ করে দশ পাউন্ডের মত ওজন কমে যাওয়া ডিম্বাশয় ক্যান্সারের পারথমিক লক্ষণ হতে পারে। ওজন কমে যাওয়ায় আপনি খুশি না হয়ে চিকিৎসকের কাছে যেয়ে দেখুন কোন সমস্যা নাই তো আবার।যোনিপথে রক্তপাতঃমাসিক সাইকেল ছাড়াও হুটহাট করে যোনিপথে রক্তপাত হওয়া ডিম্বাশয় ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণের একটা হতে পারে। রক্তপাত ছাড়াও হঠাৎ যোনিপথের আশপাশের চামড়ার রঙ পরিবর্তন হতে থাকলে কিংবা ঘা কিংবা ফুসকুড়ি দেখা দিলে কিংবা ঘন সাদা স্রাব নিঃসরণ হতে শুরু করলে সেটা ডিম্বাশয় ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

 

 

ই-বার্তা।।ডেস্ক