বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ঘিরে সেই রহস্য ভেদ বিজ্ঞানীদের!

ই-বার্তা।।  বছরের পর বছর ধরে পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। জাহাজ কিংবা বিমান, এই অঞ্চলে প্রবেশ করলেই তারা হয়ে যায় অদৃশ্য। বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় ৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই রহস্যঘন জায়গা নিয়ে আলোচনা আজকের নয়। 

 

কেন হয় এমন? এ বিষয়ে একেক জন একেক রকম মতামত দিয়েছেন। তবে সব মতেই রয়েছে রোমাঞ্চের ছোঁয়া। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই বলে এসেছেন, এর পিছনে রয়েছে নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক কারণ। সম্প্রতি মার্কিন বিজ্ঞানীদের একটি দল দাবি করেছেন, তারা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্য ভেদ করে ফেলেছেন।আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘লাইভসায়েন্স’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, বিবিসি একটি তিন পর্বের ডকুমেন্টরি সিরিজ তৈরি করেছে। যার নাম ‘দ্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এনিগমা।’ সেই সিরিজেই পরিষ্কার করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কেমন করে এই অঞ্চলে এলেই হারিয়ে যায় জাহাজ বা বিমান।যদিও তারা যা বলছেন, তা খুব নতুন কিছু নয়। সমুদ্রের সেই অঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া এলোমেলো তরঙ্গের ফলেই হারিয়ে যায় সবাই। নতুন করে এই তথ্যকেই সিলমোহর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

 

সেই দলের অন্যতম সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিদ সিমন বক্সাল জানিয়েছেন, ‘‘এব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই সেই অঞ্চলে পাগলাটে ঢেউ প্রায় দেখা যায়। যে কোনও দিকেই নজরে আসবে একাধিক ঝড় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে একত্রিত হচ্ছে।’’এই ধরনের পাগলাটে অতিকায় ঢেউকে ‘রাফ ওয়েভ’ বলা হয়। মাত্র কয়েক দশক হল এই ধরনের ঢেউয়ের অস্তিত্ব মেনে নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। একে বর্ণনা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘ওয়ালস অফ ওয়াটার’ বা পানির দেওয়াল। এই বর্ণনা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় ঢেউগুলি ঠিক কতটা ব্যাপক ও বিশাল।এমন নয় এই ধরনের পানির দেওয়াল কেবল এই অঞ্চলেই মেলে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রান্তে যেখানে দক্ষিণ আটলান্তিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ মহাসাগরের ঝড়ো ঢেউ এসে মেশে সেখানে এমন অতিকায় ঢেউয়ের দেখা মেলে।

 

বিজ্ঞানীদের দাবি, এই ধরনের ঢেউ আচমকা দেখা দিলে তার ধাক্কায় জাহাজ নিমেষেই গুঁড়িয়ে যেতে পারে। ভিনগ্রহীদের চক্রান্ত বা চৌম্বক ক্ষেত্রের তত্ত্ব নয়, এই মুহূর্তে বিজ্ঞানীরা প্রশ্ন করছেন এই তত্ত্বের হয়েই।পাশাপাশি রয়েছে ‘হিউম্যান এরর’। অর্থাৎ বহু ক্ষেত্রেই পাইলট বা ক্যাপ্টেনরা এই অঞ্চলের আশপাশে এসেই দিক নিয়ন্ত্রণে ভুল করে ফেলেন। তাতেই ঘটে যায় বিপত্তি। একটি পরিসংখ্যান বলছে, এই অঞ্চলের ৮২ শতাংশ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রেই রয়েছে যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব ও অনভিজ্ঞতা।