রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশে বোমা হামলার কথোপকথন ফাঁস

ই-বার্তা।। রাজশাহীতে বিএনপি মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনা নিয়ে দুই নেতার কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়েছে। আর এমন অডিও গোয়েন্দাদের হাতে রয়েছে। এ কথপোকথনের ভিত্তিতেই শনিবার রাতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিজেদের দলের লোকজন দিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দলের কেন্দ্রীয় সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে জানান মন্টু।

 

এক মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের এই কথপোকথনের রেকর্ড এখন গোয়েন্দাদের হাতে রয়েছে। ওই অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, মতিউর রহমান মন্টু নিজে তাইফুল ইসলামকে ফোন করেন। এ কথোপকথনের রেকর্ড দেওয়া হলো-

তাইফুল ইসলাম: জ্বি ভাই।

মতিউর রহমান মন্টু: ভালো আছো ?

তাইফুল: জ্বি ভাই।মন্টু: এই তো কালকে কাম কাজ, প্রচণ্ড রোদের তাপে জ্বর, অসুস্থ। তো গত পরশু দিন যে ঘটনা ঘটেছে তা শুনছো তো না-কি?

তাইফুল: এই একটু শুনেছি বেশি শুনি নাই। ওই যে বোমা মারিছে ওই টা তো?

মন্টু: হ্যাঁ।

তাইফুল: সেইটা তো জানি।
মন্টু: জানো, তো কারা করলো, সেইটা কি জানো? তাইফুল: হ্যাঁ?

মন্টু: কারা করেছে সেইটা কি জানো? তাইফুল: তা জানি না।

মন্টু: যাক আমি যে কথাটা বলবো তা হজম করবা, পারলে জায়গা মতো বলবা। আমাদের দুই ভাই জড়িত।

তাইফুল: হ্যাঁ…? মন্টু: আমাদের দুইজন জড়িত। বিএনপির লোক দিয়ে কাজ করানো হয়েছে। ভাইয়ের কাছ থেকে ক্রেডিট নেওয়ার জন্য আমার নির্দেশে কাজ করছে।

তাইফুল: কোন দুই ভাই? মন্টু: নাটোরের খালেক আর জাবেদ।

তাইফুল: এটা আমার বিশ্বাস হয়। মন্টু: জাভেদ হলো শাহিন শওকত ভাইয়ের লোক।

তাইফুল: হ্যাঁ, ঠিকআছে এইটা আমার বিশ্বাস হয়। মন্টু: এটা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে…ভাইয়াকে…সব ঠিক হয়ে গেছে। আমার মিছিলে লোক কম পড়ছে। আমাদের নেতা তো এখন খালি ফটোসেশন ভাই। এটা তো দলের ক্ষতি হচ্ছে।

এদিকে শনিবার রাতে মতিউর রহমান মন্টুকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে কথোপকথনের কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মতিউর রহমান মন্টু ফোনে কথার বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। ফোনালাপে তিনি যাদের কথা বলেছেন তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।গোয়েন্দা সূত্র জানায়, মতিউর রহমান মন্টু ও তাইফুল ইসলাম টিপু ফোনালাপে যাদের কথা বলেছেন, তাদের একজন শাহীন শওকত বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।

 

হামলাকারী জাভেদ তার লোক। অপর একজন নাটোরের খালেক। তাকেও শনাক্তের পর গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এদিকে গত মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (রাসিক) বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগের সময় সাগরপাড়া বটতলার মোড়ে পথসভা চলাকালে ককটেল হামলা করা হয়। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, একজন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই শামীম হোসেন বাদী হয়ে বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে অজ্ঞাত ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মন্টুকে গ্রেফতারের আগে হিমেল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

 

 

ই-বার্তা/ডেসজ রিপোর্ট