‘সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হয়, মন্ত্রীকে পিষে মারলেও কোনো কাজ হবে না ‘

ই-বার্তা ডেস্ক ।।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন পথচারীদের অসচেতনভাবে রাস্তা পারাপার হবার কারনে এখনো সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে।তিনি বলেন, মন্ত্রী বা অন্য কোনো নেতাকে পিষে মারলেও কোনো কাজ হবে না যতক্ষণ সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হবে।

প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরব সফর শেষে গণভবনে করা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি মানুষকে সচেতন করতে ও নিরাপদে রাস্তা পারাপারে  গণমাধ্যমকে ব্যাপক প্রচারেরও আহ্বান জানান।সারাদেশে নিরাপদ সড়ক দিবস আজ সরকারিভাবে পালিত হচ্ছে।নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরুর পর এই প্রথম দিবসটি পালিত হচ্ছে।

সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলনের পরও সড়কে মৃত্যু সেভাবে কমেনি বলেই  তথ্য পাওয়া যায়।একজন সংবাদিক জানান গত তিন মাসে ৯৪৭ জন নিহত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রসঙ্গে বলেন, ”পথচারীদের যেভাবে খুশি সেভাবে রাস্তা পারাপারের প্রবণতার বিষয়টি”। বলেন, ‘আপনি কি এটা বলতে পারবেন আমাকে এই যে অ্যাক্সিডেন্টগুলো হলো, তা কী কারণে হলো, কীভাবে হলো। যারা অ্যাক্সিডেন্টের শিকার হলো, তারা রাস্তার কোথায় ছিল? সেটা একটু আমাকে বলেন প্লিজ।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি  নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কথা তুলে বলেন, ‘আমার তো ধারণা ছিল এই ঘটনার পর পথচারীরা সচেতন হবে। কিন্তু সেটা কি সচেতন হয়েছে?’

উত্তরে ‘না হয়নি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’

তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেন হয়নি, আমাকে জবাব দেন। আপনাদেরই পত্রিকায়ই ছবি দেখছি। আপনারাই কোনো কোনো পত্রিকায় লেখছেন বা দেখাচ্ছেন যে গাড়ি চলছে, ওই গাড়ির ফাঁক দিয়ে, ভালো, শিক্ষিত মানুষ ফাঁকফুঁক দিয়ে বের হচ্ছে। তখন যদি কেউ অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়, আপনি কাকে দোষ দেবেন?’‘পাশে ফুটপাত বা ফুটওভার ব্রিজ অথবা আন্ডারপাস রয়ে গেছে। বাচ্চা নিয়ে দৌড় মেরে রাস্তা পার হতে যাচ্ছে, তখন যদি অ্যাক্সিডেন্টটা হয়, তখন কাকে দোষ দেবেন? সেটা আগে বলেন।’

‘সচেতনতাটা কার?’-এমন প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আমার সড়ক পরিবহনে কে আছেন, মন্ত্রী কে আছেন, তাদেরকে পিষে মারলেও তো, আমাদের তো স্বভাব পরিবর্তন হচ্ছে না যারা রাস্তায় চলছে।’ ‘আমরা তো ড্রাইভারদের দোষ দিয়েই খালাস প্রতিটি ক্ষেত্রেই। কিন্তু পথচারীদেরও যে সড়ক নিয়ম মেনে চলা উচিত, এ ব্যাপারেও তো সচেতনতা দরকার।’

‘আজকে ঢালাওভাবে অভিযোগ দিয়ে দিলেন, যে মন্ত্রী সড়ক, মালিক, শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের ধরে শাস্তি দিতে হবে। নেতাদের ধরে যদি ভালো করে পিটুনি দেই তাহলেও কি রাস্তায় দৌঁড় মারা ঠেকাতে পারবেন? আগে সেটা থামান।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দর সড়কে যে দুর্ঘটনা হয়েছে, সেটি চালকের দোষেই হয়েছে। তবে তিনি যে অ্যাক্সিডেন্ট যা হলো, তার যে কয়টার ছবি তিনি দেখেছেন তার প্রত্যেকটায় দেখা যাচ্ছে চলন্ত গাড়ির সামনে দৌড় দেয়ার জন্য হয়েছে।

‘সময়ের যেমন দাম আছে, জীবনেরও মূল্য আছে। এখন সময় বাঁচাতে গিয়ে জীবন দেয়ার কোনো মানে হয় না। বরং হাতে একটু সময় নিয়ে রাস্তায় বের হন, তাও ভালো। কিন্তু ট্রাফিক রুলটা সবাই একটু মেনে চলুন। যত্রতত্র যেখান থেকে সেখান থেকে রাস্তা পার হবেন না।

প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ বলেন ‘আর সাথে সাথে আরেকটা কথা বলব, অ্যাক্সিডেন্ট তো অ্যাক্সিডেন্টই। পৃথিবীর কোন দেশে কত অ্যাক্সিডেন্ট প্রতিদিন হচ্ছে এই খবরের সাথে সাথে সেটাও একটু বের করেন’

 

 

 

ই-বার্তা / ডেস্ক