এক সপ্তাহে সৌদি থেকে ফিরলেন ৯৩০ জন বাংলাদেশি
ই-বার্তা ডেস্ক।। সৌদি আরব থেকে আরও ১১৩ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে দেশে ফেরেন তারা।
নভেম্বর মাসের প্রথম সাত দিনে মোট ৯৩০ জন ফিরলেন। এর মধ্যে ৫৩৪ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে জরুরি সহায়তা দিয়েছে ব্র্যাক। চলতি বছরের দশ মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ২০ হাজার ৬৯২ বাংলাদেশি। বরাবরের মতো বৃহস্পতিবারও ফেরত আসাদেরও প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।
সৌদি আরব থেকে সদ্যফেরত কুষ্টিয়ার কামাল হোসেন বলেন, সাত লাখ টাকা খরচ করে দেড় বছর আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। একটি দোকানে কাজ করতেন তিনি। কাজ থেকে রুমে ফেরার সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এসময় তিনি কফিলকে (নিয়োগকর্তা) ফোন দিলে তিনি কোনো দায়িত্ব নেননি। কামালের মতো বাবুল, জহির, রেজাউলসহ আরও কয়েকজনকেও দেশে ফিরতে হয়েছে কর্মস্থলের পোশাকেই। কারও কারও পায়ে জুতাও ছিল না। নিজের জিনিসপত্র, টাকা-পয়সা— কিছুই সঙ্গে আনতে পারেননি তারা। শ্রমিকরা জানান, যে নির্মাণ কোম্পানিতে কাজ করতেন, সেখান থেকে কাজ শেষে রুমে ফেরার সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়। বৈধ আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) থাকা সত্ত্বেও তাদের ধরে এককাপড়ে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।
ফিরে আসা আরেক শ্রমিক কিশোরগঞ্জের আহসান জানান, অভাবের সংসারে দিনমজুর বাবার স্বপ্ন ছিল, ছেলে বিদেশে গিয়ে পরিবারের সচ্ছলতা আনবে। সেই স্বপ্ন নিয়ে মাত্র চার মাস আগে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। বৈধ আকামাও ছিল। কিন্তু তাকে দেশে ফিরত হলো শূন্য হাতে। একই রকম তথ্য জানান, বরিশালের শ্রাবণ, কিশোরগঞ্জের জালাল, কুমিল্লার রনি, গাইবান্ধার মোস্তফা, মুন্সীগঞ্জের হান্নানসহ আরও অনেকে। ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ফিরলেন ৯৩৪ জন। যারা ফিরে আসছেন, তাদের সবার বর্ণনা প্রায় একই রকম। প্রায় সবাই খালি হাতে ফিরেছেন।