নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢালেন জাবেদ, চেপে ধরেন মণি
ই-বার্তা।। ফেনীর সোনাগাজীর শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেন তারই সহপাঠী জাবেদ। আর আগুন যাতে ভালোভাবে লাগে সেজন্য নুসরাতকে চেপে ধরেন আরেক সহপাঠী কামরুন্নাহার মনি।
এভাবেই নুসরাত হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাবন্দি দিয়েছেন কামরুন্নাহার মনি ও জাবেদ।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে তাদের হাজির করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
কয়েক ঘণ্টার জবানবন্দি রেকর্ডের পর রাত ১০টার দিকে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পিবিআই এর চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।
তিনি বলেন, আদালতে এ দু’জন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে তারা নুসরাত কিলিং মিশনে সরাসরি জড়িত ছিলেন। নুসরাতের সারা শরীরে কেরোসিন ঢেলে দেন জাবেদ। আর আগুন ভালো করে লাগার জন্য নুসরাতকে চেপে ধরেন মনি।
তিনি আরো বলেন, এ জবানবন্দিতে নতুন কিছু নামও উঠে এসেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা উল্লেখ করা যাবে না।
এর আগে ১৫ এপ্রিল কামরুন্নাহার মনিকে সোনাগাজী থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১৭ এপ্রিল একই আদালতে তাকে সাতদিনের রিমান্ড দেওয়া হয়। শুক্রবার মনিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পিবিআই। সে সময় মনি কীভাবে নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার বর্ণনা দেন।
অপরদিকে, জাবেদকে ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই দিন থেকে তাকে সাতদিনের রিমান্ড দেন আদালত। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত আবার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত এজহারভুক্ত আটজনসহ মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাতজন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার (১০ তারিখ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফেনীর সোনগাজী উপজেলার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান। তার মৃত্যুতে দেশজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। এর আগে ২৭ মার্চ নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেফতার হন ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। এর জের ধরে ৬ এপ্রিল নুসরাতকে পরীক্ষার হল থেকে ডেকে ছাদে নিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সিরাজের অনুসারীরা।