বিদ্ধস্ত ওড়িষা, বহু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ই-বার্তা ডেস্ক।। সকাল আটটা বাজতেই ঝঞ্ঝার বেশে স্থলভূমিতে পা রাখল ‘ফণী’, পুরীর অদূরে গোপালপুরের সৈকতে। ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগে মুহূর্তে যেন লন্ডভন্ড বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় প্রস্তুতির অভাব ছিল না। তার পরেও ৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। প্লাবিত বহু নিচু এলাকা।
প্রশাসনের হিসেবে ভুবনেশ্বর, কটক, জাজপুর, ভদ্রকে কয়েক হাজার গাছ পড়ে আটকে গিয়েছে সড়ক। মোবাইল টাওয়ার উপড়ে ওড়িশার বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে বাকি বিশ্বের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ওড়িশায় আঘাত শেষে পশ্চিমবঙ্গে খড়্গপুর, আরামবাগ, বর্ধমান, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ হয়ে ফণী বাংলাদেশে চলে যাবে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছেন হাওয়া দফতর।
ফণীর ছোবল সামাল দিতে ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকেই উঠেপড়ে লেগেছিল প্রশাসন। গত কাল উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সম্ভাব্য পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার জানিয়েছেন, দুর্যোগের পরে ত্রাণ ও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে ইতিমধ্যেই আগাম ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলের নেতাকর্মীদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন খড়্গপুরে। বিপর্যয় মোকাবিলায় কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যের সব জেলাকে প্রস্তত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে তাঁর অনুরোধ, ‘‘ভয় না পেয়ে নিজেকে যতদূর সম্ভব সাবধানে রাখতে হবে। খুব প্রয়োজন না থাকলে বাইরে বেরোবেন না। এই দু’টো দিন ঝুঁকি কম নিন।’’
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে— ফণীর কেন্দ্রস্থল, যাকে ‘চোখ’ বলা হয়, তার পরিধি ছিল প্রায় ২৮ কিলোমিটার। ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার গড় গতিতে সেটি এগোচ্ছে। স্থলভূমিতে ওঠার সময়ে ঝড়ের গতি ঘণ্টায় ১৭৫-২০০ কিলোমিটার থাকলেও পরে তা কমে যায়। ভুবনেশ্বরে ঝড় বয় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে। পরে কটক ও জাজপুরের কাছে সেই গতি কমে ১০০-র কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ায়। অন্ধ্র, তেলঙ্গানা তো বটেই, ফণীর প্রভাব পড়েছে উত্তরাখণ্ড পেরিয়ে ৯০০ কিলোমিটার দূরের নেপালেও। এভারেস্টের ২ নম্বর ক্যাম্পে ঝোড়ো হাওয়ায় উড়ে গিয়েছে গোটা ২০ তাঁবু।
আবহাওয়া দফতরের হিসেবে ১৯৯৯-এর সুপার সাইক্লোনের পরে এত ভয়ঙ্কর মাত্রার ঘূর্ণিঝড় গত ২০ বছরে এই এলাকায় হয়নি। আপাতত ওড়িশায় ধ্বংসলীলা শেষ করে পশ্চিমবঙ্গের পথে ফণী।
ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু