বৈরুত বিস্ফোরণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রাণের কোনো চিহ্ন নেই
লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ জোড়া বিস্ফোরণের এক মাস পর ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল উদ্ধারকর্মীদের মধ্যে, তবে সেখানে জীবিত কারও সন্ধান পাননি বলে তারা জানান।
বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার শনাক্তকারী কুকুরের ইঙ্গিতে এবং সেন্সর মেশিনে ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রাণের অস্তিত্বের লক্ষণ পেয়েছিল চিলির স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারী সংস্থা টপোস চিলি।
বিস্ফোরণ স্থলের ৪০০ মিটার দূরে ধসে পড়া একটি ভবনের কাছে ধসে পড়া ভবনের নিচে এখনো কেউ জীবিত আছে বলে ধারণা করছেন তারা। খুব সেখানে একটি শিশু জীবিত আছেন বলে তারা আশাবাদী হন।
এ ঘটনায় টপোস চিলির একটি টিমসহ ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী ধ্বংসস্তূপের নিচে উদ্ধার অভিযান চালান। ধ্বংসস্তূপের ৯৫ শতাংশ সরিয়েও তারা কোনো প্রাণের চিহ্ন পাননি।
অলৌকিক কিছু দেখার আশায় অসংখ্য মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করে। যদিও সেখানে এমন কিছু ঘটেনি।শনিবার টপস চিলির প্রধান ফ্রান্সিসকো লেরমান্দা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, টেকনিক্যালি সেখানে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, সেন্সর মেশিনে যে শ্বাস-প্রশ্বাস ধরা পড়ে তা ছিল দুই দিন আগে ভবনের নিচে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবীদের।লেরমান্দা আরও বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা এখন এখন ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের দিকে থাকবে। এক শতাংশ আশা দেখা গেলেও সেখান থেকে আমরা পিছপা হবো না।
৪ আগস্ট স্মরণকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় লেবাননের রাজধানী বৈরুত। এ ঘটনায় প্রায় দুইশ মানুষের প্রাণহানি ঘটে, আহত হন ৬ হাজারের বেশি।
বৈরুত বন্দরের একটি গুদামে মজুত থাকা বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে অনেক দূরের এলাকাও। ভূমধ্যসাগরের অপর পাড়ের সাইপ্রাসে সৃষ্টি ভূকম্পনের।
এ ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো ধ্বংসস্তূপ সরানো সম্ভব হয়নি। এ কাজে লেবানন সরকারকে সহযোগিতা করছে দুর্যোগ মোকাবিলায় চিলির বিশেষ উদ্ধারকারী টিম টপোস চিলি।
এর আগে ২০১০ সালে হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ২৭ দিন পর এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল টপোস চিলি।
বিশ্বের বড় বড় দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজে সহায়তা দিয়ে থাকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। তাদের রয়েছে বিশেষ দক্ষতার উদ্ধারকারী কর্মী ও আধুনিক প্রযুক্তি।
২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমা অঞ্চলে নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার কাজে যুক্ত ছিল টপোস চিলি।