রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বোঝায় পরিণত হয়েছেঃ প্রধানমন্ত্রী
ই- বার্তা ডেস্ক।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বোঝায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তাদের প্রত্যাবাসন শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন ।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা এখন আমাদের জন্য বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের কারণে স্থানীয় মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এখন মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া উচিত। এসময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে সৃষ্ট ভোগান্তি মেনে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারের স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গণভবনে ইউকে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) দু’টি পৃথক প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
সফররত ইউকে কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ (সিএফওবি) ও ইউকে এপিপিজি অন পপুলেশন, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথের প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, ইউকে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন সভাপতি অ্যানী মেইন।
ইউকে এপিপিজি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের সফরের ওপর লেখা একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ায় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যহত থাকবে বলে আবারও প্রতিশ্রুতি দেন। দুই বছর আগে বাংলাদেশে তাদের সফরের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, সেই সময়ের তুলনায় এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিবেশ অনেক ভালো হয়েছে।
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে ব্রিটেন অব্যাহতভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক আরো গভীর থেকে গভীরতর হবে।
ইউকে এপিপিজি অন পপুলেশন, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গৃহীত পরিবার পরিকল্পনা নীতির প্রশংসা করেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, ‘জন্ম নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু গৃহীত নীতিটি খুবই কার্যকরী হয়েছে।’
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আরো বলেন, পরিবার পরিকল্পনা ইস্যুতে সাফল্যের কারণে এ সংক্রান্ত যুক্তরাজ্যের অনেক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নাম আছে। বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন তারা।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের স্বাধীনতা ও দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন। বাংলাদেশেকে ক্ষুধা ও দরিদ্র্যমুক্ত করার স্বপ্ন নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি বাংলাদেশকে তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দিকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই সমেই তাকে ও তার তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের উন্নয়ন, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রামীণ জনপদ ও গ্রামীণ জনমানুষের অবস্থার উন্নয়ন আমার প্রধান কাজ।
এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট উইনিংটন গিবসন। বাসস।