অস্ত্র আইনে রাশ! ট্রাম্পের প্রস্তাব

 ই- বার্তা।। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হলটা কী! লাইভ টিভিতে সিনেটরদের পাশে বসে অস্ত্র আইনে রাশ টানার জন্য নানা প্রস্তাব দিয়ে গেলেন। যা দেখে স্তম্ভিত রিপাবলিকান, ডেমোক্র্যাট, দুই শিবিরই।

গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠকে তেমনটাই ঘটেছে বুধবার। আমেরিকায় প্রায়শই স্কুলে বা অন্যত্র বন্দুকবাজের হানা হয়। সম্প্রতি ফ্লরিডার স্কুলে হামলার পরে অস্ত্র আইনে রাশ টানার দাবি তোলে পড়ুয়ারাই। কিন্তু প্রেসিডেন্ট মার্কিন শিশুদের সুরক্ষার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও সরাসরি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে একটি শব্দও খরচ করেননি। আর এক প্রস্ত বিতর্ক হয় তা নিয়েও।

বুধবার অবশ্য সব বিতর্কে জল ঢেলে সমালোচকদের মুখ এক রকম বন্ধই করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাঁর নিজের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য এবং ন্যাশনাল রাইফল অ্যাসোসিয়েশন-এর বহু বছরের বিরোধিতা যেন এক ফুঁয়ে উড়িয়ে ট্রাম্প বললেন, অস্ত্র আইনে সংস্কার নিয়ে ফের ভাবা দরকার। তাই তাঁর প্রস্তাব: ১৮ বছরের পরিবর্তে রাইফেল কেনার বয়স বাড়িয়ে ২১ বছর করা উচিত (ফ্লরিডার ঘটনার জেরে দেশের সব চেয়ে বড় দুই অস্ত্র-কারবারি ‘ওয়ালমার্ট’ এবং ‘ডিকস স্পোর্টিং গুডস’ বুধবার থেকেই ২১ বছরের নীচে কাউকে অস্ত্র বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে)। প্রেসিডেন্টের পরামর্শ, রাইফেল প্রদর্শনী বা ইন্টারনেটে অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতার অতীত রেকর্ড খতিয়ে দেখার কাজটি আরও বিস্তৃত ভাবে করতে হবে। পাশাপাশি মানসিক ভাবে অসুস্থ লোকজনের হাতে অস্ত্র যাতে না যায়, নজর রাখতে হবে সে দিকেও। স্কুলে স্কুলে নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। অ্যাসল্ট রাইফল নিষিদ্ধ করার জন্য তিনি আলোচনারও প্রস্তাব দিয়েছেন।

মানসিক ভাবে অসুস্থদের হাতে কোনও ভাবে অস্ত্র থাকলেও ট্রাম্পের মত, প্রশাসনের হাতে সে অস্ত্র আটক করার ক্ষমতা দিতে হবে। এ ছাড়া, কোনও ব্যক্তির হাতে অস্ত্র থাকলে যদি বিপজ্জনক মনে হয়, তাদের দিকেও নজর রাখতে হবে। প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘অস্ত্রটা আগে আটক করা ভাল, আইনি প্রক্রিয়া পরে হবে।’’

একের পর এক এমন সব পরামর্শের তোড়ে প্রায় হতভম্ব দশা ন্যাশনাল রাইফল অ্যাসোসিয়েশন-এর। ক্যাপিটল হিল-এ সংস্থার সদস্য এবং তাদের বিভিন্ন সমর্থকদের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প যা বলেছেন, সেটা ‘বাজে নীতি’ ছাড়া আর কিছু নয়। প্রায় এক অবস্থা রিপাবলিকান সদস্যদের। সাংবাদিকদের কাছে তাঁরা বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্টের পছন্দ নয়! শুধু এই কারণে আমরা মোটেই কোনও সাংবিধানিক সুরক্ষা নীতি থেকে সরে যাব না।’’ টেক্সাসের সেনেটর এবং শীর্ষ রিপাবলিকান সদস্য জন করনিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য পেশের সময়ে বসে ছিলেন ঠিক তাঁর পাশেই। বৈঠকের পরে করনিনের বক্তব্য, ‘‘অসাধারণ শো! পরাবাস্তবের মধ্যে রয়েছি বলে মনে হচ্ছিল!’’

ডেমোক্র্যাটরা বরাবরই অস্ত্র আইনে রাশ টানার পক্ষে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের ‘চমকে’ তাঁদের মনে হচ্ছে, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। প্রস্তাব কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সন্দিহান তাঁরা।