আদুরী-সোহাগীদের ফুটবলার উঠে আসার গল্প

ই-বার্তা ডেস্ক ।।   এদের সামনে শুধু সামাজিক বাধাই ছিল না, ছিল দারিদ্র্যের নির্মমতা, বাল্য বিবাহের চোখরাঙানি, অনুশীলনের অপ্রতুল ব্যবস্থা। কিন্তু কোনও কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি সোহাগী-আদুরীদের সামনে। সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নিভৃতপল্লী থেকে উঠে আসা ছয় নারী ফুটবলার খেলছেন জাতীয় পর্যায়ে।

নিম্নবিত্ত পরিবারের এই মেয়েদের ফুটবলে দীক্ষা দিতে সবচেয়ে বড় অবদান অধ্যক্ষ তাজুল ইসলামের। তার নিরলস পরিশ্রমে  জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে গড়ে উঠেছে রাঙ্গাটুঙ্গি মহিলা ফুটবল একাডেমি।

একাডেমি থেকে উঠে আসা ফুটবলাররা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে জেলায় একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন, রংপুর বিভাগে একবার চ্যাম্পিয়ন ও জাতীয় পর্যায়ে দুবার রানার্স-আপ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ১০ লাখ টাকা করে পুরস্কারও নিয়েছেন।

রাঙ্গাটুঙ্গি মহিলা ফুটবল একাডেমির সাবেক শিক্ষার্থী সোহাগী কিসকু ও মুন্নী আক্তার আদুরী বর্তমানে অনূর্ধ্ব-১৬ দলের সদস্য। সম্প্রতি মায়ানমারে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের বাছাই পর্বে খেলেছেন তারা, বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন চূড়ান্ত পর্বে। আর অনূর্ধ্ব-১৫ দলের জার্সিতে খেলছেন বিথীকা কিসকু, কোহাতী কিসকু, কাকলী আক্তার, শাবনুর।

প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চেক গ্রহণ করছেন আদুরীসাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে গর্বিত তাজুল ইসলাম। তিনি বললেন, ‘রাঙ্গাটুঙ্গি মহিলা ফুটবল একাডেমির ছয় জন খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে খেলছে, দুজন ১০ লাখ টাকা পুরস্কারও পেয়েছে।’

তাজুল ইসলামের এমন উদ্যোগের শুরুটা বেশ অভিনব। ২০১৪ সালে রাণীশংকৈল রাঙ্গাটুঙ্গি এলাকায় একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হয়েছিল। ম্যাচ চলার সময় মাঠের পাশেই কয়েকজন মেয়ে ফুটবল নিয়ে খেলছিল। তাদের ডেকে তাজুল ইসলাম পরের দিন মাঠে অনুশীলনের জন্য আসতে বলেন। প্রথম দিনে পাঁচ জন, ধীরে ধীরে আরও ২৪ জন ফুটবলার যুক্ত হন তার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে।এরপর রাঙ্গাটুঙ্গি মহিলা ফুটবল একাডেমিকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। 

রাঙ্গাটুঙ্গি মহিলা ফুটবল একাডেমিতে মেয়েদের  নিয়ে গর্বিত জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বাবু, রাঙ্গাটুঙ্গি ফুটবল একাডেমির মেয়েরা আমাদের গর্ব। মেয়েরা ছয় জন জাতীয় পর্যায়ে খেলছে। আশা করি, ভবিষ্যতে আরও খেলবে।

জেলা প্রশাসক ড. কামরুজ্জামান সেলিম বলেছেন, ‘ফুটবলারদের বিকাশ, প্রশিক্ষণ ও এগিয়ে চলার পথ যেন সুগম হয় সে ব্যাপারে সরকার থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

ই-বার্তা / শাহাদাত ছৈয়াল