‘আমরা যে শিক্ষা দিচ্ছি সেটিকে উচ্চশিক্ষা বলা যাবে না’

ই-বার্তা ডেস্ক ।।   আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মান প্রসঙ্গে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, ‘মানসম্পন্ন শিক্ষা দেওয়াটাই বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা যে শিক্ষা দিচ্ছি সেটিকে উচ্চশিক্ষা বলা যাবে না। এটিকে আমি কারিগরি শিক্ষা বলতে চাই। আমরা যে এমবিবিএস বা প্রকৌশল শিক্ষা দিচ্ছি এগুলো কারিগরি শিক্ষা। বাজার ধরার জন্য এইসব শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। যাতে শিক্ষার্থীরা পেশাগত স্থানে কাজ করে যেতে পারে। তবে এগুলো কোনওটাই উচ্চশিক্ষা নয়। কারণ উচ্চশিক্ষা হচ্ছে নির্মোহ শিক্ষা। কোনও চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে শিক্ষা দেওয়া।’

দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে ‘উচ্চশিক্ষায় চ্যালেঞ্জসমূহ: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ’ শীর্ষক বৈঠকিতে তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হয়েছে বাংলা ট্রিবিউনের সাপ্তাহিক এ আয়োজন।

এ সময় তিনি দার্শনিক সক্রেটিসের কথা উদ্ধৃত করে বলেন, ‘সক্রেটিস ছিলেন সবচেয়ে বড় শিক্ষক। তিনি বলতেন, “আমি কিছু জানি না।” একই সঙ্গে বলতেন, “কাউকে শেখানো অসম্ভব।” তার দু হাজার বছর পর ফ্রয়েড বলেছেন, “তিনটি জিনিস অসম্ভব; এক. কাউকে শিক্ষা দেওয়া, দুই. নিরাময় করা, তিন. পরিচালনা করা।” আমরা জানতে চাই, এই যদি বাস্তবতা হয়, তবে এত চ্যালেঞ্জ কোথা থেকে আসে। আমরা এও জেনে এসেছি সুশিক্ষিত লোক মানেই স্বশিক্ষিত। তাহলে সমাজের ভূমিকা কী।’

সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘সামাজিকভাবে আমরা জানি, শিক্ষা মানেই হচ্ছে অধিকার। কতটুকু অধিকার সেটি আগে আমাদের নির্ধারণ করতে হবে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ অধিকার নাকি দশম শ্রেণি পর্যন্ত অধিকার। কার কতটুকু অধিকার সেটি জানতে হবে।

তিনি এ প্রসঙ্গে আরও‘আমাদের সামাজিক গতিশীলতার কারণেই শিক্ষিত হচ্ছি। চাষার ছেলে রাষ্ট্রপতি হচ্ছে। শিক্ষার কাজ হচ্ছে গোটা জাতির জন্য যোগ্য লোক তৈরি করে তোলা। এখন মানুষ হিসেবে আমি দেশ ও জাতির সম্পদ। আমার পেছনে দেশ খরচ করে আর আমি বিদেশে চলে যাই।’

এছাড়াও তিনি দাবি করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা প্রবন্ধ লেখার সুযোগ পাই না। কারণ, এখানে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই অবকাঠামো নেই। আমরা মূলত শিক্ষাকে পণ্য করেছি। আমরা মানবপুঁজি বা হিউম্যান রিসোর্সের কথা বলি, কিন্তু আমরা শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতার ভূমিকায় এসে দাঁড়িয়েছি।’

ই-বার্তা / শাহাদাত ছৈয়াল