কালবৈশাখী ঝড়ে শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে

ই-বার্তা ডেস্ক ।।   নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপে কালবৈশাখী ঝড়ের আঘাতে শতাধিক বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ওইসব বাড়ির তিন শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।

গত ২৪ ঘণ্টায়ও সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে। এদিকে পাঁচটি মাছ ধরার নৌকাসহ নিখোঁজ ২০ জেলেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও জেলেরা।

মঙ্গলবার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাকিব বলেন, সোমবার সকালে নিঝুম দ্বীপের আদর্শ গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে আকস্মিক ঝড় আঘাত হানে। এতে দ্বীপের দুই শতাধিক কাঁচা-আধাপাকা ঘর বিধ্বস্ত হয়। এসময় বিধ্বস্ত ঘর ও উপড়ে পড়া গাছের ডাল-পালার আঘাতে পাঁচজন আহত হয়। দুপুরে একইভাবে আঘাত হানে টর্নেডো। এতে অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। নষ্ট হয়েছে কয়েক হাজার মণ শুকনো শুটকি।

তিনি বলেন, টর্নেডোর সময় নদীতে পাঁচটি নৌকাসহ নিখোঁজ ২০ জেলেকে সোমবার সন্ধ্যায় প্রশাসনের লোকজন অন্য জেলেদের সহায়তায় নদীর মোহনা থেকে উদ্ধার করেছে। এছাড়া ওই দিন সকালে হাতিয়ার তমরদ্দিঘাট থেকে চেয়ারম্যান ঘাটে আসার পথে ধান বোঝাই একটি ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়ে মেঘনা নদীতে ডুবে যায়। এসময় অন্য একটি ট্রলারের সহযোগিতায় ডুবন্ত ট্রলারে থাকা লোকজনদের নিরাপদে তীরে ফিরতে সক্ষম হয়।

অন্যদিকে তমরদ্দি ঘাটের কোস্টগার্ড অফিসার অনিক জানান, সোমবার সকালে ভাষানচর এলাকায় ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় ৭ নৌ কর্মকর্তাকে বহনকারী একটি স্পিডবোট। পরে ভাটিয়ারি এলাকায় স্থানীয় জেলেরা তাদের উদ্ধার করে। এরপর তাদের ছয় জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও গুরুতর একজনকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় পাঠানো হয়।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহেরাজ হোসেন বলেন, ঝড় ও টর্নেডোর আঘাতে পুরো নিঝুম দ্বীপ লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। অধিকাংশ বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। তাছাড়া ঝড় ও বৃষ্টিতে শুটকি পল্লিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। টর্নেডোর ২৪ ঘণ্টা পরও নিঝুম দ্বীপে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর এ আলম বলেন, ঝড় ও টর্নেডোর পর আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি জানিয়েছি। সরকারিভাবে এখনো কোনো বরাদ্দ আসেনি। বরাদ্দ আসলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ই-বার্তা /  তামান্না আলী প্রিয়া