কি হয়েছিল সেদিন ময়ূরপঙ্খীতে?

ই-বার্তা ডেস্ক।।  হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দন থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার উদ্দেশে  উড্ডয়ন করেছিল বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খী। 

ককপিটে ক্যাপ্টেন ছিলেন সফি।  ফার্স্ট অফিসার মুনতাসির বসেছিলেন ক্যাপ্টেনের বাম পাশে। সবকিছুই স্বাভাবিক চলছিল।  এ সময় ১/ডি নম্বর সিটে বসা ব্যাক্তিটি টয়লেটের উদ্দেশ্যে উঠে গেলে সিটটি খালি হয়।  তখনই  ১৭/এ নম্বর সিটে বসে থাকা যাত্রী পলাশ উঠে গিয়ে  খালি সিটে বসে। 

বিষয়টা দৃষ্টিকটু মনে হলে পাশের সিটে বসা এক যাত্রী সিট বদলানোর কারণ জানতে চাইলেই পলাশ দাঁড়িয়ে তার গায়ে হাত দিয়ে ইংরেজিতে বলেন, ‘এই বিমানটি ছিনতাই করা হয়েছে! অবিলম্বে ককপিটের দরজা খুলুন।  যদি বিমানটি অবতরণ করে তাহলে আমি এটা উড়িয়ে দেব’।  এরই মধ্যে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগপ্যাক থেকে একটি অস্ত্র, একটি লাইটার ও বিস্ফোরকের মতো কিছু একটা বের করেন তিনি। 

ওইদিন উড়োজাহাজে থাকা ক্রু ও যাত্রীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী পলাশের আচরণ দেখে তাকে সুস্থ স্বাভাবিক মনে হয়য় নি কেননা সে বিমানের মধ্যে অস্বাভাবিক আচরন করছিল । তবে যাত্রীদের কোনো ক্ষতি করেনি।  সে পাগলের মত প্রালাপ করে  উচ্চস্বরে বলতে থাকে, ‘আমি একজন স্কটিশ নাগরিক। আমার মাত্র একটিই দাবি। তাহলো, আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে চাই।  সে একজন সেলিব্রেটি…।’ এ সময় একটি ফাঁকা শৌচাগারের দরজার সামনে পটকা জাতীয় কিছু একটা ফোটান পলাশ।

এসময় সাকুর নামের এক যাত্রী বিশেষ সংকেত পাঠিয়ে ক্যাপ্টেনকে সতর্ক করে দেন।  সংকেত পেয়ে ক্যাপ্টেন ততক্ষনে ধারনা করে নেন ভেতরে কি ঘটতে যাচ্ছে। ক্যাপ্টেন ককপিটে থাকা বিশেষ ক্যামেরায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।

 ক্যাপ্টেন সফি  ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটার আগেই।   কারন তার হাতে ১৫০ যাত্রীর প্রাণ।চট্টগ্রাম বিমান বন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার কে পরিস্থিতি অবহিত করেন । ৩২ মিনিটের মধ্যে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে।  খুলে দেওয়া হয় জরুরি এক্সিটগুলো। যাত্রীরা নেমে যান। 

সুযোগ বুঝে বিমানে দায়িত্তরত অফিসাররাও  নেমে আসেন সর্বশেষ যে বিমান থেকে নামে তার কাছ থেকে ভিতরের অবস্থা জেনে খানিকক্ষণ পর বিমানের ভেতর কমান্ডো অভিযান চালানো হয়।  পরে গুলিব্বিদ্ধ অবস্থায় পলাশকে নামিয়ে আনেন।

ই-বার্তা/ আরমান হোসেন পার্থ