কেন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন এই ক্রিকেটার?

ওয়েন পার্নেল। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকান বামহাতি এই মিডিয়াম ফাস্ট বোলার বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের তার দূর্বার বোলিং গতিতে ধরাশায়ী করে দিতে পারেন। বিশ্বের অনেকেই ওয়েন পার্নেলকে ক্রিকেটার হিসেবে চিনলেও হয়তো এটা জানেন না যে, তিনি তার ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।

 

ওয়েন পার্নেল’র ক্রিকেট ক্যারিয়ার:

ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি ওয়ারিয়র্স ও কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের হয়ে নিয়মিত ক্রিকেট খেলেন। আর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের মাধ্যমে অভিষেক ঘটে ও পরবর্তীকালে পুনে ওয়ারিয়র্স দলের হয়ে খেলেন তিনি। ২০১৪ সালের আইপিএল নিলামে তিনি পুণরায় ১ মিলিয়ন রূপির বিনিময়ে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।

 

২০০৬ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের দক্ষিণ আফ্রিকা দলের হয়ে খেলেন ওয়েন পার্নেল। এরপর ২০০৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনোনীত হন তিনি। এই প্রতিযোগিতায় ওয়েন সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। গড়ে ৮.৩৮ রান দিয়ে ১৮ উইকেট লাভ করেছিলেন পার্নেল। কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষ ৮ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেটসহ ৫৭ রানের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন।

 

ইসলাম ধর্ম গ্রহণ:

২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও তিনি জুন ১০ তারিখ সকলের সামনে এই সত্য কথাটি প্রকাশ করেন। ধর্ম পরিবর্তনের পর তার নতুন নাম হিসেবে তিনি ‘ওয়ালিড’ নামটিকে বেছে নিয়েছিলেন বলেও ঘোষণা দেন। ওই সময় তার এই ঘোষণাকে নিয়ে বেশ জল্পনা-কল্পনা হয়েছিল।অনেকেই মনে করেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার হাশিম আমলা এবং বোলার ইমরান তাহিরই তাকে ইসলাম ধর্ম মেনে নিতে বাধ্য করেছেন।

 

তবে সেসময় এই ধারণাটিকে উড়িয়ে দিয়ে ওয়েন পার্নেল বলেছিলেন, ‘যদিও আমি আমার নাম ‘ওয়ালিড’ ঠিক করেছি, তবে আমি চাই সকলে আমাকে আমার পূর্বের নামেই ডাকুক। আমি আমার দলের সকল কিছুতে সব সময় এগিয়ে থাকবো। আমার মূল লক্ষ্য থাকবে দলের জন্য সেরাটা দিয়ে খেলা। যেহেতু রোজার সময় চলে আসছে, আমি চাই সকলেই আমার এই সিদ্ধান্তটিকে ইতিবাচকভাবে নিক বা গ্রহণ করুক।

 

আমি একজন পেশাদার ক্রিকেটার এবং আমার জীবনের এ রকম সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ক্ষমতা ও সৎ সাহস আমার আছে। এই সিদ্ধান্তে দলের কোন সদস্য কিংবা আমাকে কেউ উদ্বুদ্ধ করেননি। আমি নিজেই আমার জন্য ভালোটা বেছে নিয়েছি।’

 

যদিও তিনি তার ধর্ম পরিবর্তন করার কোন কারণ জানান নি, তবে একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছিল যে তিনি নিয়মিত মুসলিম বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। আর সেখান থেকেই তিনি ইসলাম ধর্মের আলোয় আলোকিত হন এবং এই ধর্মে উৎসাহী হয়ে পড়েন।

 

তবুও তিনি আরো বহুদিন ইসলাম ধর্মকে অনুসরণ করে পরিশেষে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে ধর্ম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নাম ঠিক করেন ‘ওয়ালিড’।