ক্রাইস্টচার্চে হামলার আগে প্রধানমন্ত্রীকে মেইল করেছিলেন ব্রেন্টন

ই-বার্তা।।  নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার আগমুহূর্তে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডানকে ইমেইল করেছিলেন সন্দেহভাজন হামলাকারী। ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে ভয়াবহ হামলার কয়েক মিনিট আগে হামলাকারীর মেনিফেস্টোসহ একটি মেইল পায় প্রধানমন্ত্রীর দফতর।

জাসিন্ডার প্রধান প্রেস সচিব অ্যান্ড্রো ক্যাম্পবেলের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এমন তথ্য জানিয়েছে।

অ্যান্ড্রো গণমাধ্যমকে জানান, ইমেইলটি দফতরের একজন কর্মকর্তার ইমেইল ঠিকানায় পাঠানো হয়েছিল, যা তাৎক্ষনিক প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়নি।

এ হামলার ৮৭ পৃষ্ঠার মেনিফেস্টো প্রায় একই সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট করা হয়েছিল। জাতিগত বিভেদের বার্তাসহ বিদ্বেষ যেখানে অভিবাসী এবং মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডার্ন বলেছেন, ক্রাইস্টচার্চ হামলায় হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারেন্টের পাঁচটি অস্ত্র ব্যবহার করেছেন।

তার কাছে ২০১৭ সালে নেয়া ‘ক্যাটাগরি এ’ শ্রেণির একটি লাইসেন্স রয়েছে বলে জানান তিনি।এমন হামলা ঘটনায় প্রেক্ষিতে আমাদের অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনা হবেও বলে জানান তিনি।

এর আগে অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত ব্রেন্টন সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জানিয়েছিলেন, ব্রেন্টন মৌলবাদী, ডানপন্থী ও সহিংস সন্ত্রাসী। যে কারণে তাকে অস্ট্রেলিয়ায় হাজতবাস করতে হয়েছিল।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) ওই হামলাঘটনার পরদিনই হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে ক্রাইস্টচার্চ ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে হাজির করা হয়।

নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় গণমাধ্যমে আদালতের শুনানিকালে হামলাকারীর ছবি প্রকাশ হয়েছে। সেই ছবিতে দেখা গেছে এমন মৃত্যুর পাহাড় তৈরি করেও অনুতপ্ত নয় ওই ব্যক্তি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, শুনানির সময় তাকে দেখে মনে হচ্ছিল, তার মধ্যে কোনও অনুশোচনার লেশমাত্র নেই।

পুলিশ জানিয়েছে, ব্রেন্টন ট্যারেন্টের পক্ষের আইনজীবী তার জামিন বা ঘটনা অন্যদিকের ঘোরানোর কিংবা অভিযুক্তের নাম ধামাচাপা দেয়ার কোনো চেষ্টাই করেননি। নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড আরও জানিয়েছে, আগামী ৫ এপ্রিল আদালতে পরবর্তী হাজিরা দেয়ার আগ পর্যন্ত অভিযুক্ত হামলাকারীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে মুসল্লিদের ওপর স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলা চালান ব্রেনটন।

ওই হামলাঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। পরদিন ভোরে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচটি ছিল, যা বাতিল হয়ে যায়।