ক্ষমতা চিরদিন থাকে না, দাপট দেখাবেন না: কাদের

ই-বার্তা ডেস্ক।। দলীয় নেতাকর্মীদের ক্ষমতার দাপট না দেখানোর আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ মানে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে সৃষ্টির স্লোগান।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, দুঃসসময় মোকাবেলার নাম আওয়ামী লীগ। সব দুঃসসময় ও দুর্যোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে আওয়ামী লীগ আজ ক্ষমতায়। কাদের বলেন, আজ সুসময় আছে। এই সুসময় চিরদিন নাও থাকতে পারে। সেতুমন্ত্রী নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, মনে রাখবেন ক্ষমতা আছে, কিন্তু তা ক্ষমতা চিরদিন নাও থাকতে পারে। ক্ষমতা চিরদিন থাকে না। ক্ষমতা এক সময় চলে যাবে। ক্ষমতার দাপট কেউ দেখাবেন না। বিনয়ী থাকবেন। আমাদের নেত্রী বলেছেন সাধারণ জীবনযাপন করতে হবে। অনেক স্বপ্ন দেখতে হবে। অনেক স্বপ্ন দেখাতেও হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দুঃসময়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের মূল্যায়ন না করে বসন্তের কোকিলদের হাতে নেতৃত্ব দেয়া যাবে না। মাদকসেবী, দুর্নীতিবাজ, টেন্ডারবাজ চাঁদাবাজদের নেতৃত্বকে না বলুন। দীর্ঘদিন রংপুরে কমিটি না হওয়ার কারণে সেশনজটে আটকে গেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব। ত্যাগী নেতাদের কোণঠাসা করে আত্মীয়দের নেতা বানাবেন না। বিশুদ্ধ রক্ত দিয়ে দল পরিচালনা করুন। দলের নেতৃত্ব তাদের হাতে তুলে দিন। দূষিত রক্তদের পরিহার করুন। তিনি আরও বলেন, এক সময় রংপুরের মানুষ মঙ্গাকবলিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী সেই মঙ্গাকে যাদুঘরে পাঠিয়েছেন। রংপুরকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপক উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে। বগুড়া থেকে চারলেনের কাজ শুরু হয়েছে। রংপুর থেকে বুড়িমারী বাংলাবান্ধা সড়ক করা হবে। গোটা উত্তরাঞ্চলের সমস্ত মহাসড়ক চারলেনের আওতায় আনা হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, রংপুর জেলার ৯৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। দ্রুত শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা হবে। বিশ্বের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে এক নম্বরে রয়েছেন শেখ হাসিনা। বিশ্বের মহিলা নেতাদের তালিকাও শীর্ষে রয়েছেন তিনি। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়বে। সেই যাত্রায় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। দীর্ঘদিন পর অবশেষে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সম্মেলন। ২০০৭ সালে সাফিয়ার রহমান সাফিকে সভাপতি ও বাবু তুষার কান্তি মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়।

১৯৯৭ সালে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন হয়। ২০০৬ সালে রংপুর জেলা সম্মেলন আহ্বান করা হলে দলের দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে তা পণ্ড হয়ে যায়। পরে আহ্বায়ক কমিটি দ্বারা জেলা আওয়ামী লীগ পরিচালিত হয়। ২০০৯ সালে মরহুম আবুল মনসুর আহমেদকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় কমিটি। পরে আবুল মনসুর আহমেদের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। সমাবেশের পরে জেলা ও মহানগর কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলন উদ্বোধন করেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। জেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি রেজাউল করিম রাজু ও মহানগর সভাপতি সাফিউর রহমান সফি। সম্মেলন উপস্থাপনা করেন মহানগর সেক্রেটারি তুষার কান্তি মণ্ডল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক টিপু মুনশি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আখতার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন।