খেয়ে কী হবে? আমি বেঁচে থেকেই বা কী লাভ’?

ই-বার্তা ।।  দুর্ঘটনায় হাত হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। এমনকি খাবারও খাচ্ছেন না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাজীবকে খাওয়ানোর জন্য স্বজনরা চেষ্টা করলেও তিনি খেতে চাইছেন না। মুখের সামনে খাবার নিলে তিনি রেগে যাচ্ছেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা নাকের মধ্যে নল ঢুকিয়ে তাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি।

নিজের প্রতিই বড় অভিমান করেছেন রাজীব। বলছেন- ‘আমি খাব না, খেয়ে কী হবে? আমি বেঁচে থেকেই বা কী লাভ’?

রাজীবের পাশে আছেন তার খালা জাহানারা বেগম। তিনি বলেন, গত শুক্রবার থেকে রাজীব চোখ খুলেছে। তার জ্ঞানও কিছুটা ওই দিন থেকে ফেরা শুরু করে। প্রথমে রাজীব ডান হাত সোজা করে দিতে বললেও শনিবার থেকে বুঝতে পেরেছে, তার ডান হাত নেই। তখন থেকেই শুধু বিলাপ করছে। বলছে, হাত না থাকলে বেঁচে থেকে লাভ নেই। এখন অনেকটা চুপচাপ শুয়ে থাকে। কিন্তু খাওয়ার কথা বললেই রেগে যায়।

তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ঢামেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান শাহীন বলেন, রাজীবের শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় উন্নতি হয়েছে। তবে খেতে চাইছে না। খাওয়া-দাওয়া করলে শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হতো।

ডা. শামসুজ্জামান আরও বলেন, রোববার আবার তার সিটিস্ক্যানসহ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করা যাবে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম হাসপাতালে রাজীবকে দেখতে গিয়ে চাকরির আশ্বাস দেন। দুর্ঘটনার পরদিন হাইকোর্ট বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে রাজীবের চিকিৎসার ব্যয় বহনের পাশাপাশি কৃত্রিম হাত সংযোজনের খরচ দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেন। দুই বাসের চাপায় তার ডান হাত কনুইয়ের ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পর পরই তাকে পান্থপথের বেসরকারি শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

রিমান্ড শেষে কারাগারে দুই বাস চালক :এদিকে রাজীবের হাত হারানোর ঘটনায় গ্রেফতার বিআরটিসি বাসের চালক মো. ওয়াহেদ আলী এবং স্বজন বাসের চালক মো. খোরশেদকে দুই দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বিডি২৪লাইভ/এসএস