গুহার ভেতরে কিভাবে বেঁচেছিল কিশোর ফূটবলাররা?

ই-বার্তা।।  থাইল্যান্ডের একটি পাহাড়ের গুহার ভেতরে ১৭ দিন ধরে আটকা পড়ে থাকার পর ১২ জন কিশোর ফুটবলার এবং তাদের কোচকে উদ্ধার করা হয়েছে। পানিতে ডুবে যাওয়া গুহার ভেতর থেকে তাদেরকে শেষ পর্যন্ত বের করে আনতে সক্ষম হয়েছেন ডুবুরিরা। এদিকে গতকাল বুধবার প্রথমবারের মতো হাসপাতালে অবস্থান করা কিশোরদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। মা-বাবা ও স্বজনরা তাদের দেখার সুযোগ পেয়েছেন। গত ২৩ জুন তারা নিখোঁজ হয়। খবর বিবিসি’র।

 

আটকে পড়া, বেঁচে থাকা এবং উদ্ধার করার কাহিনি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাদের নিখোঁজ হওয়ার ৯ দিন পর তাদের সম্পর্কে প্রথম জানা যায়। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় কীভাবে বেঁচে ছিল তারা? জানা যায়, দলের একজনের জন্মদিন উপলক্ষে সারপ্রাইজ পার্টি করতে তারা গুহার ভেতরে ঢুকেছিল। প্রবল বৃষ্টির কারণে গুহার ভেতরে পানি ঢুকতে শুরু করলে তারা পালাতে পালাতে গুহার গভীরে চলে যায়। দলের সদস্য পীরাপাত সম্পিয়াংজাইয়ে জন্মদিন ছিল ২৩ জুন। সেদিন তার বয়স হয়েছিল ১৭ বছর। তার জন্মদিন উপলক্ষে দলের অন্যান্য ছেলেরা খাবার নিয়েছিল এবং ধারণা করা হচ্ছে গুহার ভেতরে আটকা পড়ার পর এসব স্ন্যাক্স খেয়েই বাচ্চারা বেঁচে ছিল। বলা হচ্ছে, বাচ্চাদের জন্যে প্রয়োজনীয় খাবার কমার আশঙ্কায় গুহার ভেতরে এসব খাবার খেতে রাজি হননি ফুটবলারদের কোচ একাপল চানতাওং। ফলে ২ জুলাই ডুবুরিরা যখন ফুটবল দলটিকে গুহার ভেতরে খুঁজে পান, তখন শারীরিকভাবে সবচেয়ে দুর্বল ছিলেন কোচ একাপল। তাদের সন্ধান পাওয়ার পর তাদেরকে বাইরে থেকে খাবার দেওয়া শুরু হয়। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে সহজে হজম হয় এরকম খাবার, শক্তিদায়ক খাদ্য যেগুলোতে মিনারেল ও ভিটামিন মেশানো হয়েছে। চিকিত্সকদের পরামর্শেই তাদেরকে এসব খাবার দেওয়া হয়, বলেছেন উদ্ধারকারী দল থাই নেভি সিলের প্রধান এডমিরাল আরপাকর্ন ইওকোংকাওয়ে। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত জন্মদিনের খাবার খেয়েই বেঁচে ছিলো তারা।

 

কর্তৃপক্ষ জানায়, গুহার দেয়াল থেকে যেসব পানি চুইয়ে চুইয়ে পড়েছে সেসব পানি খেয়েছে বাচ্চারা। কারণ গুহায় প্লাবিত হয়ে যাওয়া বৃষ্টির পানি ছিল ঘোলা ও নোংরা। কিশোরদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিদর্শক থংচাই লের্তওলিরাতানাপং বলেছেন, তারা ভালো আছে। মানসিকভাবেও তারা সুস্থ। তবে তিনি বলেছেন, বেশিরভাগ শিশুরই গড়ে দুই কেজি করে ওজন কমেছে। থাই কর্মকর্তারা বলেছেন, নিজেদের উষ্ণ রাখার জন্যে তারা গুহার ভেতরে পাঁচ মিটার গভীর গর্ত খুঁড়েছিল। পাথর দিয়ে সুড়ঙ্গটা তৈরি করেছিল তারা। নিজেদের উষ্ণ রাখতে তারা সুড়ঙ্গের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছিল।