চকবাজার যেন নিমতলীর পুনরাবৃত্তি

ই-বার্তা ডেস্ক।।  মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সেই একই ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি ঘটলো রাজধানীর পুরান ঢাকায়।  চকবাজারের অগ্নিকাণ্ড বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে নিমতলীতে ২০১০ সালের ৩ জুনের আগুনে ১২৪ জনের প্রাণহানির ঘটনা।  বুধবার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত  ৭৬ জন আগুনে প্রাণ হারিয়েছে। 

সময় এবং স্থানের পার্থক্য থাকলেও পার্থক্য নেই শুধু এই দুর্ঘটনার পরিণতি নিয়ে।  প্রায় সাড়ে ৮ বছর পর নিমতলীর ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকেই।  সবাই বলছেন, নিমতলীর পর সতর্ক হলে এতো মানুষকে আর প্রাণ দিতে হতো না এভাবে।

২০১০ সালের ৩ জুন রাত ৯টার দিকে নিমতলীর নবাব কাটরায় একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের বিস্ফোরণ ঘটে।  এতে একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন ধরে যায়।  সেই কারখানায় বিপজ্জনক কেমিক্যাল ছিল।  ফলে আগুনের লেলিহান শিখা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।  মুহূর্তে আগুন আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।  আগুনে প্রাণ হারান ১২৪ জন মানুষ। 

প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগ্নিকাণ্ডের পর পুরান ঢাকার ওই ঘিঞ্জি এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হচ্ছিল।  আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের।  প্লাস্টিক কারখানায় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত বাড়তে থাকে তখন। 

ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পর তালিকা করে ৮০০ রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা পুরান ঢাকা থেকে কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার।  তবে শেষ পর্যন্ত কাজটি আর হয়নি।  সেই বিপজ্জনক কেমিক্যালের কারখানা ও গুদাম এখনো সরানো হয়নি। 

নিমতলীর ওই ভয়াবহ ঘটনার পর বুধবার আবারও ঘটলো সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।  ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের জিয়াউর রহমান বলেন, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজারে চুড়িহাট্টা মসজিদ গলির একটি পাঁচতলা ভবনে আগুন লাগে।  খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে দেয়। পাঁচতলা আবাসিক ভবনের নিচে রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে।  তাই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

আগুন লাগার কয়েক ঘণ্টার পর বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আনার কথা নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৭০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।  এখনও ঘটনাস্থলে সার্চ অভিযান চলছে।’  

ই-বার্তা/মোঃ সালাউদ্দিন সাজু