চালকের ফাঁসির দাবিতে সড়কে শিক্ষার্থীরা

ই-বার্তা।।  রাজধানীর প্রগতি সরণি সড়কে বেপরোয়া বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। ঘাতক সুপ্রভাত পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল, ঘাতক চালকের ফাঁসির দাবিসহ ১২ দফা দাবিতে নানা স্লোগান দিচ্ছেন তারা।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক গেট এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের কাছে যান ঢাকা সিটি উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া যত দ্রুত সম্ভব মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। সেইসঙ্গে লিখিতভাবে দাবিগুলো উত্থাপনের অনুরোধ জানান।

মেয়রের অনুরোধে বিইউপি শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে :

দাবিগুলো হচ্ছে-

১. পরিবহন সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং প্রতি মাসে বাসচালকের লাইসেন্সসহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করতে হবে।
২. আটক চালক ও সম্পৃক্ত সকলকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৩. আজ থেকে ফিটনেস বিহীন বাস ও লাইসেন্স বিহীন চালককে দ্রুত সময়ে অপসারণ করতে হবে।
৪. ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সকল স্থানে আন্ডারপাস, স্পিড ব্রেকার এবং ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
৫. চলমান আইনের পরিবর্তন করে সড়ক হত্যার সাথে জড়িত সকলকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৬. দায়িত্ব অবহেলাকারী প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে স্থায়ী অপসারণ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭. প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্টপ এবং যাত্রীছাউনি করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং
৮. ছাত্রদের হাফ পাস (অর্ধেক ভাড়া) অথবা আলাদা বাস সার্ভিস চালু করতে হবে।

এ সময় মেয়র বলেন, আগামী দুই মাস কিংবা সর্বোচ্চ ৩ মাসের মধ্যে এই জায়গায় আবরার চৌধুরীর নামে ফুটওভার ব্রিজ করে দেবো। আপনারা আমাকে একটু সময় দেন।

এ ঘটনায় আপনাদের মাঝে থেকে ২/৫ জনকে নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করবো। প্রয়োজনে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবো। আপনাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করবো।

এ ছাড়া রাজধানীতে সুপ্রভাত পরিবহনের কোনো বাস চলবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র। তিনি বলেন, আমি অলরেডি বলে দিয়েছি এ বাস বন্ধ করতে। এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাসের মালিকদের সযুক্ত করা হবে।

ঘাতক বাসচালকের বিচারের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ঘাতক চালকের বিচার করতেই হবে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার সর্বোচ্চ বিচার হবে।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর নর্দা এলাকায় দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বাসের চাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নিহত হয়। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যাওয়া ওই বাসচালককে এবং জব্দ করা হয়েছে বাসটিকে।

মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ওই শিক্ষার্থী রাস্তা পারাপারের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আবরার বসুন্ধরা এলাকায় থাকতেন। আবরারের লাশ রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।