চা উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের রেকর্ড

ই- বার্তা ডেস্ক।।   চা শিল্পে গত বছরের চেয়ে এবার দেশে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছে। এটা শুধু দেশে নয়, গত জুলাই মাস পর্যন্ত বিশ্বের চা উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে সবার ওপরে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র (বিটিআরআই) ও বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের (বিটিআরআই) পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী জানান, শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি নয়, এ বছর চায়ের গুণগতমানও ভালো হচ্ছে। চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত দেশে চায়ের উৎপাদন হয়েছে ৫৩ মিলিয়ন কেজি। যা গত বছর এই সময়ে ছিল ৪২ মিলিয়ন কেজি।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. কে এম রফিকুল হক জানান, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি চা উৎপাদন হয়েছে। আর নিকটতম অবস্থানে রয়েছে ভারত ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত থাকলে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে যাবে বলে তার ধারণা।

এ বছর বাংলাদেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও একই সময়ে আনুপাতিকহারে বিশ্বের অনান্য রাষ্ট্রে চায়ের উৎপাদন কমেছে। অধিক চা উৎপাদনকারী দেশ শ্রীলংকা জুলাই মাস পর্যন্ত গত বছরের তুলনায় উৎপাদন হার বেড়েছে মাত্র ০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অপরদিকে, কেনিয়ায় কমেছে ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি চায়ের মৌসুমের শুরু থেকে চায়ের উপযোগী বৃষ্টিপাত, প্রয়োজনীয় সূর্যের আলো এবং অনুকূল আবহাওয়ার ফলে চায়ের উৎপাদন বেড়েছে। এ বছর উৎপাদনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা সংসদ সিলেট অঞ্চলের ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান জি এম শিবলী বলেন, দেশের চায়ের দুই-তৃতীয়াংশ উৎপাদন হয় মৌলভীবাজার জেলার ৯২টি চা বাগানে। তবে অনুকূল আবহাওয়া না থাকাসহ নানা জটিলতায় বিগত দুই বছর ধরে চায়ের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হয়নি। পরে সংশ্লিষ্ট চা বাগান কর্তৃপক্ষ ও চা বোর্ডের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে চলতি বছরে চায়ের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে থাকে। অনুকূল আবহাওয়া বজায় থাকলে গত বছরে চায়ের উৎপাদন ৮২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে এ বছর ডিসেম্বরে ৯০ মিলিয়ন কেজির লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এদিকে চায়ের উৎপাদন ভালো হওয়ায় খুশি চা শ্রমিকরাও। তারা জানান, তারা প্রতিদিন গড়ে ২৪ কেজি চা পাতা তোলেন। কিন্তু উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় তারা পাতা তুলছেন ৩৫ থেকে ৭০-৮০ কেজি পর্যন্ত। এতে তারা অতিরিক্ত আয় করছেন।