চীনের পর এবার ব্রাজিলে দেখা দিয়েছে নতুন ভাইরাস

সম্প্রতি ব্রাজিলের বিজ্ঞানীরা নতুন এক ধরনের ভাইরাস আবিষ্কার করেছেন। এটি সম্পূর্ণ অস্বীকৃত জিন দিয়ে তৈরি যার ৯০ শতাংশই বিজ্ঞানীদের অজানা। আজ পর্যন্ত যেসব গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া গেছে তাতে এই ভাইরাসটির বিষয়ে কিছু বলা নেই।

রাশিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরটি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা নতুন প্রজাতির এই ভাইরাসটির নাম দিয়েছেন ‘ইয়ারাভাইরাস ব্রাসিলিয়েনসিস’ বা ‘ইয়ারাভাইরাস’। ব্রাজিলের উপকথার দেবতা নামানুসারে এই নামকরণ করা হয়েছে।

ব্রাজিলের বেলো হরিজোনটে শহরের পামপুলহা লেক থেকে নতুন প্রজাতির এই ভাইরাসটি আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা।

আরটি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরে বিভিন্ন প্রজাতির ভাইরাস আবিষ্কার করেছেন ভাইরাসবিদ ও গবেষকরা। এর মধ্যে একটি প্রজাতির নাম দেয়া হয়েছে জায়ান্ট ভাইরাস। তবে মানবদেহের ধ্বংসাত্মক কাজের জন্য নয়, অপেক্ষাকৃত বড় প্রোটিন শেলের কারণে এই নাম দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

এই জায়ান্ট ভাইরাসের জিনোম (জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের বিন্যাস বা নকশা) জটিল প্রকৃতির। তাদের জেনেটিক বৈশিষ্ট্য বিজ্ঞানীদের ধারণার বাইরে বা সাধারণ ভাইরাসের মতো নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিজস্ব ডিএনএ পুনর্গঠন বা নকল করতে সক্ষম এই ভাইরাস। তবে নতুন আবিষ্কৃত ইয়ারাভাইরাস জায়ান্ট ভাইরাস থেকে ভিন্ন।

সম্প্রতি জীববিজ্ঞান বিষয়ক ওপেন অ্যাকসেস বায়ো-আর্কাইভ ওয়েবসাইটে প্রকাশ হয়েছে এই গবেষণা প্রবন্ধ। সেখানে নতুন ভাইরাসটি সর্ম্পকে ধারণা দেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষক দল জানিয়েছেন, সাধারণ অ্যামিবা ভাইরাস থেকে ভিন্ন নতুন এই ভাইরাস। কিন্তু কিছু কিছু ইয়ারাভাইরাস জায়ান্ট ভাইরাসের মতো হতে পারে। এই প্রজাতির ভাইরাসের আদি রহস্য সম্পর্কে জানা যায়নি।

ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটির ভাইরাসবিদ জোঁনাটাস আব্রাহাঁও বলেছেন, ‘ভাইরাসটি পরীক্ষার ফলাফল আমাদের এটাই বলছে যে, না জানি এই ভাইরাসটি সম্পর্কে জানতে আমাদের আর কতকাল অপেক্ষো করতে হবে!’

তিনি ও তার সহকর্মীরা বর্তমানে নতুন এই ভাইরাসটির পাশাপাশি সম্প্রতি মহামারি আকার ধারণ করা নোভেল করোনাভাইরাসের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। সোমবার একদিনে আরও ১০৮ জন মারা যাওয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৬ জন। গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথমবার শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এটাই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড।

মঙ্গলবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত দেশটির মূল ভূখণ্ডে অন্তত ২ হাজার ৪৭৮ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬৩৮ জন। সোমবার মৃতদের মধ্যে ১০৩ জনই মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের এবং অন্তত ৬৭ জন সেখানকার রাজধানী শহর উহানের।

তবে ব্রাজিলে আবিষ্কৃত নতুন ইয়ারাভাইরাস নিয়ে বলতে গেলে এখন ধন্দেই রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। করোনার মতো এটাও প্রাণঘাতী হয় কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ল বিশ্বে।

সূত্র : আরটি, ইনডিপেন্ডেন্ট