ছেলেদের জন্য গর্বিত, দ্রাবিড়

 

২০০০, ২০০৮, ২০১২-র পরে ২০১৮। মুহাম্মদ কাইফ, বিরাট কোহালি, উন্মুক্ত চন্দের পর পৃথ্বী শ। চতুর্থ বার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়। বিশ্বকে বার্তা দিয়ে রাখল ভারতীয় ক্রিকেট, অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ড নয়, এখন তারাই মহাশক্তি।

গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফাইনালিস্ট। মেয়েদের বিশ্বকাপে ফাইনালিস্ট। খুদেদের বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন। বিশেষজ্ঞরা যা দেখে বলে দিচ্ছেন, ভারতীয় ক্রিকেটে অবশেষে ‘সিস্টেম’-এর ফসল মিলতে শুরু করেছে।

ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া হারার পর ডিন জোন্স টিভি-তে বলছিলেন, শুধু চেন্নাইয়ে যত ছেলে এখন ক্রিকেট খেলে, গোটা অস্ট্রেলিয়ায় তত জন খেলে কি না, সংশয় রয়েছে। বিস্ময়ের কী আছে যে, ভারত হারাচ্ছে তাঁদের!

রাহুল দ্রাবিড়ের এই অনূর্ধ্ব-১৯ দলেই যেমন। নানা জায়গা থেকে উঠে আসা সব খুদে প্রতিভা। ফাইনালে নায়ক দিল্লির মনজ্যোৎ কালরা। বাঁ হাতি ওপেনার করলেন ১০২ বলে ১০১ অপরাজিত। তার আগে বল হাতে অস্ট্রেলিয়াকে ২১৬ রানে শেষ করে দিয়েছেন পেসাররা। বাংলার ঈশান পোড়েল নিলেন সাত ওভারে ৩০ রানে দুই উইকেট। টুর্নামেন্টের সেরা পঞ্জাবের শুভমান গিল। যাঁকে ডাকা হচ্ছে নতুন যুবরাজ বলে।

দেশের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপ জয়েও টুর্নামেন্টের সেরা ছিলেন যুবি। নীল বনাম হলুদ জার্সির লড়াই দেখতে দেখতে কারও নিশ্চয়ই মনে পড়ছিল ২০০৩ ওয়ান্ডারার্সের সেই ফাইনাল। সে দিন যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত হেরেছিল রিকি পন্টিংদের অস্ট্রেলিয়ার কাছে। ছোটদের হাত ধরে ছোটখাটো শাপমুক্তিও কি ঘটল না?

সে দিন সৌরভের দলের অন্যতম সারথি ছিলেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেটের ‘ওয়াল’ হয়েও খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা হয়নি। কে জানত, রাহুল দ্রাবিড় ফিরে আসবেন কোচ হয়ে ছোটদের বিশ্বকাপে হাত রাখতে! এ দিন সব চেয়ে বেশি আলোচিত হল একটি ছবি। দ্রাবিড় টিভি-তে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন আর সদ্য বিশ্বজয়ী ছাত্ররা তাঁর পিছনে এসে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হুল্লোড় করছেন।

আট উইকেটে একপেশে ফাইনাল জেতার পরেও সতর্ক পেশাদার পৃথ্বীদের কোচ। বললেন, ‘‘ছেলেদের জন্য গর্বিত। এই মুহূর্ত ওরা উপভোগ করুক কিন্তু চাইব, এই মুহূর্তটা দিয়েই যেন লোকে ওদের না চেনে। আরও অনেক গৌরব যেন আদায় করে নিতে পারে।’’ বরাবরের সেই দ্রাবিড়-সভ্যতা। সাফল্যে গাছের ছায়া খুঁজো না। তৈরি হও আরও দুর্গম পথ পেরোনোর জন্য।