জজের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ অতঃপর

ডেস্ক রিপোর্ট।। নারায়ণগঞ্জ জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ পদমর্যাদা) মো. জুয়েল রানার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন এক নারী (৩১)।

সোমবার ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার আমিরাবাদ নিবাসী ওই নারী। ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামসুন্নানার অভিযোগের বিষয়ে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট রায়হান মোর্শেদ মামলা এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।মামলার অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত বিচারক মো. জুয়েল রানা এর আগে ঢাকা জজ কোর্টে অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে ২০১৫ সালে কর্মরত থাকাকালীন তার আদালতে একটি পারিবারিক রিভিশন মামলা বিচারাধীন ছিল। পরবর্তীতে বিচারক নিজেই বাদিনীকে ফোন করে সরকারি চাকরির প্রলোভন দিয়ে ওই আদালতে অস্থায়ী স্টানোগ্রাফার হিসেবে চাকরি দেন। এরপর তিনি বাদিনীকে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিতে সাঁটলিপি শিখতে ভর্তে হওয়াসহ বিভিন্ন সৎ উপদেশ দিলে তিনি বাদিনীর বিশ্বাস অর্জন করেন। পরবর্তীতে বাদিনী আদালতে নিয়োগ পরীক্ষা দিলেও সরকারি চাকরি না হওয়ায় তিনি একটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে চলে যান। বাদিনী চলে গেলেও বিচারক জুয়েল রানা বাদিনীকে ফোন করে আসতে বলেন। না আসলে পারিবারিক মামলা আপিলে আসলে ক্ষতি করবেন বলে হুমকি দেন। বাদিনী বাধ্য হয়ে অফিসে আসেন এবং বিচারকের অধীনে কাজ করতে থাকেন। এরপর ২০১৫ সালের ৮ জুন বিচারক জুয়েল রানা বাদিনীকে তার স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কথা বলে তার বাসায় নিয়ে যান এবং বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে জোর করে ৩ বার ধর্ষণ করেন। উক্ত ঘটনা সম্পর্কে বাদিনী কাউকে কিছু জানালে খুন করে ফেলবে বলে আসামি হুমকি দেন। এরপর বাদিনী ওই বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা করান। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর বাদিনী অসুস্থ হলে তাকে বিয়ে করে ওই বিচারককে চিকিৎসা করাতে বলেন।

 

পরে আসামি ওই বছর ৮ নভেম্বর এক র‌্যাব কর্মকর্তাকে বাদিনীর বাসায় পাঠিয়ে ধর্ষণ সংক্রান্ত সমস্ত কাগজপত্রসহ বাদিনীকে আসামির কাছে নিয়ে আসেন। এরপর ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটের খিলক্ষেত থানায় একটি মিথ্যা মামলার মাধ্যমে বাদিনীকে জেলে পাঠান। পরবর্তীতে বাদিনী জামিনে মুক্তি পেয়ে ধর্ষণের কাগজপত্রের ডুপ্লিকেট কপি তোলার চেষ্টা করলে আসামি ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই অজ্ঞাত পরিচয় লোক দিয়ে বাদিনীকে তুলে আনেন এবং রমনা থানায় নিজে বাদী হয়ে বাদিনীর বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনের একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বাদিনী ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন।

 

 

 

ই-বার্তা/ডেস্ক