“জিল দ্য রাই”, ইতিহাসের কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার!

ই-বার্তা ।।  সাদিকুর রহমান আকিব।।  আধুনিক সিরিয়াল কিলারদের পথিকৃৎও বলা হয় তাঁকে। ছয় থেকে ষোল বছরের শিশুরাই ছিল যার লক্ষবস্তু। তাদের হত্যা করে সে এক পৈশাচিক আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটাত। পৃথিবী জুড়েই এমন কিছু ব্যক্তির কথা লোকমুখে প্রচলিত যারা সিরিয়াল কিলার হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে।

সিরিয়াল কিলার কথাটি মাথায় আসলেই আমাদের মনে এমন এক ব্যক্তির চিএ ফুঁটে উঠে, যারা তাদের কামনা বাসনা চিরায়ত করতে জানোয়ারের ন্যায় নৃশংসভাবে নর হত্যার খেলাতে নিজেদের উগরে দিয়েছিল। এদের চরিত্র ছিল অমানবিক, নিষ্ঠুর, বদমেজাজি আর লাগামহীন যৌনতা। বেশিরভাগ ক্ষেএে দেখা গেছে এরা একই নিয়মে নারকীয় হত্যা চালিয়ে থাকে। তাদের এই পৈশাচিক নরহত্যার মূলে ছিল ব্যক্তিগত আক্রোশ, অর্থের লোভ, আবার কখন বা নিকৃষ্ট চিন্তা চেতনা বাস্তবায়নের বহিঃপ্রকাশ মাএ।

সেই সিরিয়াল কিলারদের কথা উঠলে যার নামটি হোম পেইজএর প্রথম সারিতে চলে আসে তিনিই ”জিল দ্য রাই”। আধুনিক সিরিয়াল কিলারদের এই পথিকৃৎ জিল কে নিয়েই আজকের লেখা। তাহলে চলুন ডুব মারি তার কুখ্যাত সব কিলার মিশন গুলোর কয়েকটিতে।

পনেরো শতকে (১৪০৪সালে) জন্ম নেয়া ”জিল দ্য রাই” ছিলেন একজন সামরিক ক্যাপ্টেন। সামরিক বাহিনীতে প্রবেশের কয়েকছর পর চাকরি ছেড়ে চলে আসেন। কি উদ্দেশ্যে চাকরি থেকে চলে এলেন তার কোন সঠিক তথ্য জানা যায় নি। তবে অনেকের মতে তার বিকৃত সব কর্মকান্ডের দরুন হয়তো তাকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছিল। (দুর্বল তথ্য) তারপর শুরু হয় তার পৈশাচিক মিশন। জড়িয়ে পড়েন নিকৃষ্ট সব কিলার মিশনে। শিশুরাই ছিল তার আক্রোশ এর লক্ষবস্তু।বিশেষ করে ”ব্লন্ড চুল ও নীল চোখ” ওয়ালা বালক দেখলেই ঝাপিয়ে পরতো। কারণ হিসেবে জিল নিজেও “ব্লন্ড চুল ও নীল চোখের” অধিকারী থাকায় এমনটি করতো ধারণা করা হয়।

জিল এর কিলার মিশন এর সহযোগী ছিল তার চাকর হ্যানরিয়েট। হ্যানরিয়েটকে জিল এর কিলার মিশন এর যোগানদাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সে তার দুষ্টু বুদ্ধি আর বিচক্ষণতার মাধ্যমে শিশুদের ভুলিয়ে জিল এর ডেরায় নিয়ে আসত। জিল প্রথমে তার ডেরায় নিয়ে নিয়ে আসা শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাতো। কখনও কখনও মাএাতিরিক্ত বেত্রাঘাত করতো। বেত্রাঘাতে আক্রান্ত শিশুদের রক্ত ঝরার চিৎকারে সে অট্টহাসিতে মেতে উঠতো। তারপর হত্যা করে তার আক্রোশ মেটাত। শুধু তাই নয় সে এসব শিশুদের রক্ত নিয়ে গোসল করতো, রক্ত গায়ে মেখে মনের কোন এক গুপ্ত তৃপ্তি মেটাত। “দ্যা গ্রেট কিলার, জিল” অত্যন্ত চতুঁরতার সাথে তার মিশন বাস্তবায়নে ছিল সদা বিচক্ষণ। সব ধরণের প্রমাণ লোপাট করার জন্য সে হত্যার পর শিশুদের জামা-কাপড় সহ পুড়িয়ে ফেলতে পর্যন্ত ক্লান্ত হতো না। কখন বা কখনও যুবক-যুবতীরাও তার নারকীয় হত্যাকান্ডের ফাঁদে পড়তো। বাদ যেত না বৃদ্ধরাও। অনেকের ধারণা জিল তার কিলার মিশন এ মোট ৮০-২২০টির বেশি হত্যা করেছে।

কেউ কেউ মনে করেন সে ৬০০ এর ও অধিক হত্যায় জড়িত ছিল। তার মধ্যে ১০০টিরও অধিক হত্যা তার নিজ হাতে সংগঠিত হয়। এতগুলো কিলার মিশন বাস্তবায়নের পর অবশেষে সে পুলিশের নজরে আসে। গ্রেপ্তার করে পুলিশ তাঁকে তাদের ডেরায় নিয়ে যায়।

নিজের অকপটে সব স্বীকার করে জবানবন্দী দেয়। অবশেষে ১৪৪০ সালের ২৬ অক্টোবর ৩৬ বছর বয়সে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয় সিরিয়াল কিলারদের এই পথিকৃৎ কে।

“জিল দ্য রাই” এর এই ঠান্ডা মাথার কিলার মিশন গুলো পরবর্তীতে উসকে দিয়েছিল আরো যুগ যুগ ধরে জন্ম নেয়া বিকৃত মস্তিষ্কের গুপ্ত ঘাতকদের। সিরিয়াল কিলার দের নিয়ে গবেষণা ও নেহাত কম নয়। অনেক গবেষণায় এইসব বিকৃত রুচির নরপিশাচদের কেন্দ্র করে বানানো হয়েছে অসংখ্য ছবি, লেখা হয়ছে তথ্যসমৃদ্ধ বই আর অনেক বানানো রুপকথা। কিছুটা ভয়ের, তবুও মানষ কেন এসবের দিকে ঝুকে? হবেই তো! বিচিএ পৃথিবী বিচিএ মানুষজন!!