তরুণীর দল পাড়ি জমাচ্ছে মালয়েশিয়ায়, বিয়ের বাজার বেশ চড়া

ই-বার্তা ডেস্ক ।।  পাত্রকে নগদ টাকা দিতে না পেরে বিয়ে হচ্ছে না কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের শত শত তরুণীর। সেটাও এক টাকা-দুই টাকা নয়। নিদেন পক্ষে দুই লাখ টাকার ব্যাপার। রোহিঙ্গা বাবা-মায়েরা এ টাকা পাবেন কোথায়! তাই তরুণীর দল পাড়ি জমাচ্ছে মালয়েশিয়ায়। বিয়ের বাজার মালয়েশিয়ায় বেশ চড়া।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের টেকনাফের সাগর তীরবর্তী বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। পুলিশের উপস্থিতিতে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গা তরুণীরাই একদম খোলামেলাভাবে জানায়, শিবিরে টাকার অভাবে পাত্র মিলছে না। অথচ তাদের বিয়ে করা দরকার। মালয়েশিয়ায় বিয়ের বাজারে তাদের (রোহিঙ্গা তরুণী) চাহিদা বেশি। তাই স্বেচ্ছায় পাড়ি দিচ্ছে মালয়েশিয়ার পথে।

টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতভর সাগর পাড়ের বড় ডেইল সহ আরো অন্যান্য এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু সহ ২০ জনকে। তদন্ত কেন্দ্রটিতে উদ্ধার হওয়া মালয়েশিয়াগামী ১৩ জনের মধ্যে ৭ জনই অবিবাহিত তরুণী।

পুলিশ বলেছে, এ পর্যন্ত উদ্ধার করা মালয়েশিয়াগামীদের মধ্যে রোহিঙ্গা কিশোরী ও তরুণীর সংখ্যাই সবেচেয়ে বেশি। তাদের মধ্যে রোহিঙ্গা তরুণী নুর বাহার এবং হাসিনা আপন খালাত বোন। দুই জনেরই বয়স ১৮/১৯ বছর। নুর বাহার টেকনাফের জাইল্যাঘাটা শিবিরের ডি-৫ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মোহাম্মদ হোসেন এবং শেড মাঝির নাম জিয়াবুল। আর হাসিনা টেকনাফ জামতলী শিবিরের ডি-৮ ব্লকের বাসিন্দা। হাসিনার বাবার নাম রহমুতল্লাহ ও শেড মাঝির নাম দীল মোহাম্মদ।

রোহিঙ্গা তরুণী হাসিনা এবং নুর বাহার অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানায়, আমাদের মা-বাবার কাছে এমন কোনো টাকা নেই, যাতে করে পাত্রদের চাহিদা পূরণ করতে পারে। পাত্রকে কমপক্ষে দুই লাখ টাকা করে দিতে হয় বিয়ের জন্য। তাই আমরা স্বেচ্ছায় নিজেদের পথ বেছে নিচ্ছি।

হাসিনা এবং নুর বাহার বলেন, মালয়েশিয়ায় পৌঁছাতে পারলেই টাকা এবং পাত্র (স্বামী) পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণেই তারা ছুটছে এখন মালয়েশিয়ার পথে। সেখানে উপস্থিত অন্যান্য রোহিঙ্গা তরুণীরাও একই ধরনের কথা বলেছেন।

এ ধরনের তথ্য দালালরাই এসব রোহিঙ্গা অবিবাহিত তরুণী-কিশোরীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে পাচারে উৎসাহিত করছে বলে এলাকাবাসীর কাছে ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা তরুণীর দল এলাকাবাসীর ধারণাকে উড়িয়ে দিয়ে চলেছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার এক রাতেই টেকনাফ উপকূলের তিনটি পয়েন্ট থেকে বিজিবি ও পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ৫০ জন রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশুকে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে উদ্ধার করে।

ই-বার্তা /  তামান্না আলী প্রিয়া