তিনমাসের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলো মেরিন ড্রাইভ

ই-বার্তা ডেস্ক ।।  কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংস্কার কাজের জন্য আজ শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) থেকে তিনমাসের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলো ।

এ সংস্কার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা। তবে পর্যটকেরা ইচ্ছা করলে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক দিয়ে উখিয়ার কোটবাজার এবং টেকনাফ অংশ দিয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়কে আসতে পারবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে মেয়র জানান, গাড়ির অতিরিক্ত চাপ ও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় পর্যটন নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের বেহাল দশা। ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিদিন। তাই সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কাজ চলাকালে এই সড়কের বিকল্প হিসেবে লিংকরোড হয়ে মেরিন ড্রাইভ সড়কটি ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে সংস্কার কাজ বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন মেয়র মুজিবুর রহমান। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পৌরবাসী ও সড়কে চলাচলকারীদের অনাকাঙ্ক্ষিত কষ্টের জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছেন তিনি।

কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রের তীর ধরে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধন হয় ২০১৭ সালের ৬ মে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তবে ১৯৯১-৯২ সালে সড়ক প্রকল্পটি গ্রহণের পর থেকেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

কিন্তু মেরিন ড্রাইভের স্টার্টিং পয়েন্ট কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে বেইলি হ্যাচারি মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৩শ’ মিটার সড়ক বিগত ২০০০ সালে সামুদ্রিক ভাঙনে বিলীন হয়ে গেলে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে সড়ক যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

পরে ২০০৫-০৬ সালে কলাতলী গ্রামের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া সংকীর্ণ সড়কটিকে সামান্য প্রশস্ত করে মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না করায় বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

ফলে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগে স্থানীয়রা সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও একেবারে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণায় অসন্তোষও দেখা দিয়েছে। শুক্রবার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করার পর বিভিন্ন মহলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।

স্থানীয়রা জানান, কলাতলীর দক্ষিণে মেরিন ড্রাইভের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও কোনো হাইস্কুল নেই। তাই ওই অংশের বেশিরভাগ শিশুকে ওই সড়কটি পার হয়ে কলাতলী উত্তর অংশের স্কুলে আসতে হয়।

সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হলে প্রতিদিন প্রায় ছয় কিলোমিটারেরও বেশি পথ হেঁটে শিশুদের স্কুলে যাতায়াত করতে হবে। তাই স্কুলগামী এসব শিশুর অভিভাবকদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ-উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে, মেরিন ড্রাইভ সড়কটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলে হিমছড়ি ও দরিয়ানগর পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক কমে যাবে এবং কলাতলী থেকে দক্ষিণে প্রায় ২৪ কিলোমিটার এলাকার হোটেল-মোটেলসহ অন্যান্য পর্যটন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

ই-বার্তা /  তামান্না আলী প্রিয়া