দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা

ই-বার্তা ডেস্কঃ দক্ষিণ আফ্রিকায় জহিরুল ইসলাম হাওলাদার (৪২) নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। তিনি কেপটাউন শহরের ক্রাইফনটেইন এলাকায় ব্যবসা করতেন বলে জানা গেছে।

শনিবার (২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটার দিকে তার প্রতিবেশী এক আফ্রিকান সন্ত্রাসী তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত জহিরুল শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের সাদেক আলী হাওলাদারের ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০০৫ সালে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান জহিরুল। ক্যাপটাউন শহরের ক্রাই ফনটেইন এলাকায় তার সুপারশপের দোকান ছিল। কিছু দিন পূর্বে জহিরুল ইসলামের ভাড়া বাসার পাশের রুমে নতুন স্থানীয় ভাড়াটিয়ারা ভাড়া নেয়। এরপর ওই ভাড়াটিয়ারা জহিরুলের কাছে মদ খাওয়ার জন্য চাঁদা দাবি করে। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানায় জহির।

এ নিয়ে শনিবার সকালে ওই ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় তারা জহিরের পেটে ছুরিকাঘাত করে। পরে জহির বাঁচার জন্য চিৎকার দিতে দিতে রাস্তায় বের হয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাকে দৌড়ে ধরে গলায় ছুরিকাঘাত করে ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তার মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানোর পর থেকে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্ত্রী, একমাত্র মেয়ে, মা, ভাই-বোনসহ স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সে দেশের বাড়িতে এসেছিল বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানান।

নাছিমা ইসলাম শরীয়তপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন। শনিবার দুপুর ২টা ১০ মিনিটের সময় তার ফেসবুক প্রফাইলে স্বামী ও কন্যার সাথে তোলা হাস্যজ্জ্বল একটি ছবি আপলোড করেন। এর কিছু সময় পরই স্বামীর মৃত্যু সংবাদ পান তিনি।

স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পরই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন নাছিমা। স্বজনদের সান্ত্বনাও যেন তাকে স্বাভাবিক করতে পারছে না। একমাত্র মেয়েটি স্থানীয় এক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বাবার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর অঝোর ধারায় সে কেঁদে যাচ্ছে।

ই-বার্তা// আরাফাত ইসলাম শুভ