দুর্নীতি ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বে তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

দুর্নীতি ও ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থী দল ইন্নাদহার সঙ্গে টানাপোড়েনের মুখে পদত্যাগ করেছেন তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী এলিয়েস ফখফখ। গত বছরের অক্টোবরে নির্বাচনে পার্লামেন্টে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল ইন্নাদহা দলের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে স্বার্থের দ্বন্দ্ব চলছিল ফখফখের। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে বেশ দুর্নীতির অভিযোগও তদন্তাধীন।

বুধবার দেশটির সরকার এক বিবৃতিতে তথ্য জানায় বলে বার্তা সংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবর।

নির্বাচনে জিতলেও সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না ইন্নাহদা দলের। চার মাস অচলাবস্থার পর সবার অনুমোদনে গত ফেব্রুয়ারিতে জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন ফখফখ।

অক্টোবরের নির্বাচনে তিউনিসিয়ার পার্লামেন্টের ২১৭টি আসনের মধ্যে ৫৪টি আসন পায় ইন্নাদহা। ফলে শেষ পর্যন্ত জোট সরকার গড়তে সম্মত হয় তারা।

দলটির পক্ষ থেকে প্রথমে নিরপেক্ষ কাউকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা পার্লামেন্টে পাস হয়নি। এরপর প্রেসিডেন্ট কায়েস সায়েদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সাবেক অর্থমন্ত্রী ফকফকে নিয়োগ দেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে এরই মধ্যে অর্থনৈতিক ভিত নড়বড়ে হয়ে পড়েছে তিউনিসিয়া। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে নতুন সংকটে পড়ল ভূমধ্যসাগর ঘেঁষা উত্তর আফ্রিকার দেশটি।

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানো ফখফখ ছোট একটি সামাজিক গণতান্ত্রিক দলের নেতা। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগও তদন্তাধীন রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ ছাড়ছিলেন না। আর এসব প্রতিষ্ঠানও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সরকারি শেয়ারগুলো ভাগিয়ে নিচ্ছিল। এসব ফখফখের সঙ্গে পার্লামেন্টের সংখ্যাধিক্য দল ইন্নাদহার সঙ্গে বিরোধ চরমে উঠেছিল।

গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে ইন্নাদহার জ্যেষ্ঠ নেতা আব্দেলকরিম হারুনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, “দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি খুবই বাজে। এ অবস্থা থেকে এমন সরকার দ্বারাই পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে, সেই সরকারের প্রধানের কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকবে না।”

ফখফখের পদত্যাগের ঘোষণার আগে ইন্নাদহার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল তারা প্রধানমন্ত্রীর ওপর থেকে আস্থা সরিয়ে নেবে।