পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাস বন্ধ

ই-বার্তা ডেস্ক।। যশোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, বাস ও ট্রাক মালিক সমিতির ডাকে যশোরের ১৮টি রুটে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে চতুর্থ দিনের মতো।

আজ বুধবার ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে এ কারণে বেনাপোল বন্দরে আমদানিকৃত পণ্য লোড-আনলোড কার্যত বন্ধ রয়েছে। তবে এ সময় বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় ট্রাক হতে পণ্য আনলোডসহ দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সচল রয়েছে। আমদানিকৃত-পণ্য পরিবহনের জন্য পর্যাপ্ত ট্রাক না পাওয়াই বিপাকে পড়েছেন ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীরা।বাস ও ট্রাক মালিক সমিতি হঠাৎ করে যশোরের ১৮টি রুটে শ্রমিক ধর্মঘট ডাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেনাপোল ট্রান্সর্পোট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। কিছু কিছু পণ্যবোঝাই ট্রাক বন্দর এলাকা ছেড়ে গেলেও পথের মধ্যে আটকে দিচ্ছেন বিক্ষুব্ধ ট্রাক শ্রমিকরা।

ফলে বন্দর এলাকায় ট্রাক থাকলেও ভয়ে পণ্য পরিবহন করতে রাজি হচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট ট্রাক ড্রাইভাররা। এতে বেনাপোল বন্দরে তৈরি হচ্ছে ভয়াবহ পণ্যজট। নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে যশোর থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয় রোববার। আজ তা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা হোসেন বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় পরিবহন শ্রমিকরা ‘স্বেচ্ছায়’ বাস চালাচ্ছেন না। জেলাগুলো হলো- যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা। শ্রমিকরা কাউকে ইচ্ছা করে হত্যা করে না জানিয়ে তিনি। অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনার জন্য নতুন সড়ক আইনে তাদের ‘ঘাতক’বলা হচ্ছে। তাদের জন্য এমন আইন করা হয়েছে, যা সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

তিনি আরও বলেন, নতুন আইনের অনেক ধারার ব্যাপারে শ্রমিকদের আপত্তি রয়েছে। সরকার সমাধানের কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় শ্রমিকরা রোববার দুপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতি যশোরের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ জানান, ১৪ নভেম্বর যশোরে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে সড়ক আইন ২০১৮ সংশোধনের দাবি করা হয়। এর পর রোববার সকাল থেকে যশোরের ১৮ রুটের শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তবে বেনাপোল-যশোর ও যশোর-সাতক্ষীরার অভ্যন্তরীণ রুটে কোনো যাত্রীবাহী বাস চলাচল না করলেও কার, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, নসিমন-করিমন জাতীয় ছোট যানবাহন এবং অযান্ত্রিক গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

বেনাপোল সোহাগ পরিবহনের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম জানান, ভারতফেরত আটকে পড়া কিছু যাত্রী তাদের কাউন্টারে অবস্থান করছেন। আবার অনেকে স্থানীয় বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে ঠাঁই নিয়েছেন। ধর্মঘট প্রত্যাহার অথবা শেষ হলে তবেই যাত্রীবাহী বাস ছাড়া হবে বলে জানান তিনি। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, ধর্মঘটের মধ্যে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে। বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান, পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে বেনাপোল বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও ভারত থেকে আমদানি পণ্য প্রবেশে কোনো বাধা নেই।