পানির উপরে সাইকেল চালাল জমির, আশ্চর্য ফরিদপুরবাসী!

ই-বার্তা ডেস্ক ।। মানুষ তার প্রতিভাকে তার কাজের মাধ্যমে বিকশিত করতে চায়। নিজের প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারলেই সফলতার মুখ দেখে। কেউ তার প্রতিভাকে বিকশিত করে হয়েছেন কালজয়ী। আর কেউ সেটাকে এগিয়ে নিতে না পেরে থেকে গেছেন ইতিহাসের অতল গহ্বরে। এবার ফরিদপুরের জমির হোসেন আবিষ্কার করেছেন ভিন্ন ধর্মী এক সাইকেল।

 

সড়কের পাশাপাশি পানিতেও সমানতালে চালানোর উপযোগী করে বাইসাইকেল তৈরি করছেন ফরিদপুরের জমির হোসেন নামের ঐ যুবক। নিজ মেধা ও শ্রমের বানানো এই বাইসাইকেল পরীক্ষামূলকভাবে পানিতে চালানো হয়েছে। সড়কের পাশাপাশি পানিতেও সমানতালে চলতে সক্ষম বিশেষভাবে তৈরি এই সাইকেল।

 

বিশেষভাবে তৈরি জমিরের বাইসাইকেলটি পানিতে চালানো হয়। পানিতে চলা এ সাইকেল চালনা দেখতে শত শত স্থানীয় মানুষ ভিড় করে। পায়ে চালিত এ বাইসাইকেলটি তৈরি করেছেন ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের জমির হোসেন। তার বাবার নাম পাচু মাতুব্বর। মোটরচালিত বাইসাইকেল তৈরির পর এবার সে উদ্ভাবন করলেন জলে-স্থলে একই গতিতে চলা বাইসাইকেল। যা পানিতে ঘণ্টায় ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে।

 

বাই সাইকেল বানানো প্রসঙ্গে জমির হোসেন জানান, পানি দিয়ে চলার জন্য পায়ে চালিত প্যাডেলের সাথে পেনিয়াম সেট করে পেছনে স্পিডবোর্ডের পাখার আদলে শক্তিশালী একটি পাখা লাগানো হয়েছে। পায়ের প্যাডেল একবার ঘুরলে পাখাটি ৫০ বার ঘুরবে। এতে বেশ স্পিডে পানিতে চলবে বাইসাইকেলটি। সাইকেলটি পানিতে ভাসিয়ে রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে নমনীয় বায়ুভর্তি টিউব। যখন বাইসাইকেলটি রাস্তায় চলবে তখন বাতাসবিহিন টিউব সাইকেলের পেছনের একটি বাক্সে থাকবে।

 

যখন বাইসাইকেলটি পানিতে চলবে তখন শুধু দুটি টিউব হাওয়া দিয়ে বাই সাইকেলের নাট-বল্টুর সাথে লাগিয়ে দিতে হবে। এছাড়া স্থায়ীভাবে পানিতে চালানো বাই সাইকেলটিতে টিউবের পরিবর্তে পিভিসি পাইপ দিয়েও একই ভাবে ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া এ সাইকেলে মোটর লাগিয়েও চালানো যাবে। যা দ্রুতগতি সম্পন্ন হবে। এটি বানাতে খরচ হবে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।

 

যারা সাঁতার জানেন না তারাও এ বাইসাইকেল চালাতে পারবে। সেফটি বেল্ট থাকায় সাইকেলের চালক সিট থেকে পড়ে গেলেও চালক পানিতে ভেসে থাকবে।দরিদ্র পরিবারের সন্তান জমিরের বাবা পাচু মাতুব্বর একজন ভ্যানচালক। জমির গত বছর এসএসসি পাশ করে ফরিদপুর মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।

 

কিন্তু পড়ালেখার খরচ মেটাতে না পেরে আর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেনি। পড়ালেখা বাদ দিয়ে নিজে রিকশা-ভ্যান মেরামত ও ইলেকট্রিক কাজ করে যা আয় করেন তার থেকে কিছু বাঁচিয়ে সে নানা উদ্ভাবনী কাজে টাকা খরচ করেন।তিনি জানান, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কেউ সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিলে তিনি অনেক নতুন কিছু করতে সক্ষম হবেন।

 

 

 

ই-বার্তা/ডেস্ক