প্রথম বৈঠকে দুই ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও পুতিন

ই-বার্তা/আন্তর্জাতিক।।   ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পুতিনের পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর বৈঠকটি শুরু হয়। বৈঠকে বসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।  বিশ্বের প্রভাবশালী দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার এই দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটিই প্রথম বৈঠক। বৈঠক উপলক্ষে হেলসিংকিতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে উত্তেজনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন শীর্ষ রাজনীতিক ট্রাম্প-পুতিন শীর্ষ বৈঠক বাতিলের দাবি জানানো সত্ত্বেও এ বৈঠক হচ্ছে। তবে বৈঠক থেকে বড় কিছু আশা করছে না কোনো পক্ষ। বৈঠকের শুরুতেই দুই নেতা করমর্দন করেন। এরপর সফলভাবে বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনের জন্য পুতিনকে শুভেচ্ছা জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন,

 

“চমৎকার একটি বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। সত্যিই এটি বিশ্বকাপ ফুটবলের সেরা আয়োজনগুলোর একটি।”

 

নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলোর কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অবৈধভাবে প্রবেশের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দ্বাদশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা অভিযুক্ত হয়েছেন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে রাশিয়ার ১২ জন সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। তাদের মধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে ওই নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক পার্টি ও প্রেসিডেন্ট পদে দলটির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের প্রচারণা শিবিরের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হ্যাকের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাই বৈঠক বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন শীর্ষ অনেক নেতা।

 

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই ১২ জনের বিরুদ্ধে সামরিক গোয়েন্দাগিরি বা হ্যাকিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ নেই। একে ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে তারা। ক্রেমলিন উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, ‘আমরা ট্রাম্পকে একজন আলোচক হিসেবেই দেখছি। দুই দেশের সম্পর্ক এখন খুব খারাপ। সে সম্পর্ককে ঠিক করার কাজ শুরু করতে হবে।’ এদিকে মার্কিন ডেমোক্র্যাটদের উচ্চপদস্থ অনেকেই পুতিনের সঙ্গে এ বৈঠক বাতিলের দাবি জানান। ডিএনসির চেয়ারম্যান টম পিরেজ বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবশ্যই পুতিনের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করা উচিত। কারণ পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু নন।

 

ঐতিহাসিক এ বৈঠককে সামনে রেখে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ কাজে যোগ দেওয়ার জন্য ছুটিতে থাকা পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাদের ডাকা হয়েছে। কারণ, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মধ্যে এ বৈঠকের প্রতিবাদে জোরালো বিক্ষোভ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে লন্ডনে ট্রাম্পবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের ধারণা করা হলেও বাস্তবে তা হয়নি। গত মাসের শেষের দিকে ঘোষণা করা ট্রাম্প-পুতিনের এ সম্মেলন হচ্ছে ফিনল্যান্ডের রাজধানীতে এ ধরনের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান।

 

এর আগে ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিনের মধ্যে এ ধরনের বৈঠক হয়েছিল। নট্রাম্প ও পুতিনের এ বৈঠক কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে সংশয় আছে। তবে দুই নেতার বৈঠকে সম্ভাব্য কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এগুলো হলো অস্ত্র প্রতিযোগিতা, নিষেধাজ্ঞা থেকে স্বস্তিত, সিরিয়া নিয়ে চুক্তি, কূটনৈতিক পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ। এ ছাড়াও থাকতে পারে অস্ত্রনিরোধ, ন্যাটো বিষয়ক আলোচনা, ইরানের পারমাণবিক ইস্যু, উত্তর কোরিয়া, নার্ভাস এজেন্ট গ্যাস এবং বাণিজ্য যুদ্ধ।