প্রশাসন সবই জানে, দাবি অর্থমন্ত্রীর

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে এনবিআর কাজ শুরু করেছে। আইনের মধ্যে থেকে যতটুকু সম্ভব এনবিআর তাই করবে।

তিনি বলেন, প্রশাসন জানে না- এমন কোন কাজ দেশে হতে পারে না। প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না। মঙ্গলবার রাজধানীতে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক সেমিনার শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের টাকা ব্যাংকে রাখার বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও (এনবিআর) দেখছে। তবে কারও কাছে টাকা থাকলেই এনবিআর তা আনতে পারে না।

প্রক্রিয়া অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তি নোটিশ পেয়ে আয়ের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারলে কর আইনে জরিমানা কেটে রাখা হবে। আর ব্যাখ্যা দিতে না পারলে অন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারেও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

অবৈধভাবে কেউ অর্থ উপার্জন করলেই এনবিআর ব্যবস্থা নিতে পারে না। আইনি প্রক্রিয়ায় এনবিআরের যেটুকু পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ রয়েছে তা নেবে। এর বাইরে এনবিআর যাবে না। এজন্য অনেক প্রতিষ্ঠান আছে। বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সরকারের আরও এজেন্সি আছে।

তিনি বলেন, অপরাধী যত বড় ও শক্তিশালীই হোক না কেন, প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। যে কোনো ক্ষেত্রে অন্যায় হলে অ্যাকশন নেয়া হবে। শাস্তি দেয়া হবে। কারণ জাতীয় নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ও নির্বাচনের পরও প্রধানমন্ত্রী অনিয়ম মেনে না নেয়ার কথা বলেছেন।

কয়েক বছর ধরে দেশে ক্যাসিনো পরিচালিত হলেও প্রধানমন্ত্রী বলার আগে কেউ জানতে পারল না- এ সংস্কৃতি (কালচার) দেশের জন্য কতটুকু সুস্থ- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি দেশের জন্য আদৌ সুস্থ নয়।

আমার বিশ্বাস- আমি এখানে (হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল) বৈঠক করছি এ খবর প্রশাসন জানে। ক্যাসিনোর ঘটনা না জানলে প্রশাসন সে ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেবে। তবে প্রশাসন জানে না- এমন কাজ দেশে হতে পারে না। আমি মনে করি, প্রশাসনের কেউ না কেউ, কোনো না কোনোভাবে ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত। প্রশাসন দায়িত্ব এড়াতে পারে না।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ক্যাসিনো সরঞ্জামের আমদানি কীভাবে হয়েছে, সেটি এনবিআর দেখছে। তাদের কাজ তারা করবে। এগুলো বিদেশ থেকে আনায় বিল অব এন্ট্রি হয়েছে। এ সময় এনবিআরে কারা দায়িত্বে ছিলেন, তা দেখা হবে।

দেশে ক্যাসিনো পরিচালনার বৈধতা দেয়া হবে কি না বা নীতিমালা করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশে লাইসেন্স নিয়ে ক্যাসিনো চলছে। বাইরের নিয়ম আমাদের দেশে চলবে না। ক্যাসিনো হল জুয়া খেলা। দেশে জুয়া খেলার অনুমতি দেয়া হবে না। জুয়া খেলা ক্যাসিনো চলতে পারে না। অবৈধ কাজ আইন করে সরকার বৈধতা দেবে না।

ক্যাসিনোর জন্য বিদেশিদের কী বলে দেশে আনা হয়েছিল প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ অপারেশনে প্রত্যেক মানুষ সমর্থন দিচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।