বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কাঁদলেন মাহবুব তালুকদার
ই-বার্তা ডেস্ক।। মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে কেঁদেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
স্মৃতিচারণার একপর্যায়ে পুরো মিলনায়তন ছিল নীরব। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মাহবুব তালুকদার। কোনো কথা বলতে পারছিলেন না।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ওই দিনই তিনি আমায় ডেকে পাঠান। বলেন, মাহবুব, তুমি আমার সঙ্গে থাকবা। আমাকে রাষ্ট্রপতির সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়। পদবি বড় কথা নয়, দায়িত্ব অর্পিত হওয়ার পর স্বভাবতই আমি খুব খুশি হই।’
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মাহবুব তালুকদার। বলেন, ‘ঘটনাটি ১৯৭৫ সালের এপ্রিল মাসের। বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমান যেদিন মারা যান। সেদিন আমি ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সারা দিন ছিলাম। চল্লিশার দিনে ঠিক হয়, বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়া যাবেন। সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ, তিন বাহিনীর প্রধান ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা থাকবেন। গাজী জাহাজে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়। আমার জাহাজ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা না থাকায় কাপড়চোপড় সঙ্গে নেয়ার কথা মনে হয়নি। রাতে জাহাজ ছাড়লে দেখি, আমার শোবার কোনো জায়গা নেই। একপাশে একটি খালি সোফা পেয়ে শুয়ে পড়ি। পাশেই তখনকার এডিসি রাব্বানি সাহেব ছিলেন। মাঝরাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। দেখি, রাব্বানি জেগে আছেন। আমার মাথার নিচে বালিশ। আমি অবাক হয়ে রাব্বানিকে জিজ্ঞেস করি, এই বালিশ আমার মাথার নিচে কে দিলেন? রাব্বানি বলেন- রাতে বঙ্গবন্ধু রাউন্ডে এসেছিলেন। তিনি দেখেন আপনি মাথার নিচে হাত দিয়ে সোফায় শুয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু তার রুমে গিয়ে বালিশ নিয়ে এসে আপনার মাথার নিচে রেখে গেছেন।’
এসময় কান্নায় ভেঙে পরেন তিনি। ভার ভার কণ্ঠে বলেন, ‘আমি জানতাম বঙ্গবন্ধুর দুটি বালিশ ছাড়া ঘুম হয় না। তখন আমি বালিশ ফিরিয়ে দিতে বঙ্গবন্ধুর রুমের দিকে যাওয়ার কথা বলি। রাব্বানি জানান, গিয়ে লাভ নেই। বঙ্গবন্ধু দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েছেন।’
ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু