বাংলাদেশের জেতার রহস্য কি জানেন?

যে দল জিতবে সেই দলই খেলবে ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে। আর হারলেই ছিটকে যেতে হবে।এমন হারা-জেতার লড়াই চিন্তা মাথায় নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ম্যাচের শুরু থেকেই দর্শকদের মনে ঘুরছিলো একটাই প্রশ্ন। কে যাবে ফাইনালে?

ম্যাচটা ছিলো অনেকটাই নাটকীয়। খেলায় ছিলো টান টান উত্তেজনা। পুরো ম্যাচটাই ছিলো উত্তেজনায় ভরপুর।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে এভাবে কেন জিততে হলো বাংলাদেশকে?

কারণ হিসেবে বলা যায়, এ জয় অনেক দিন মনে দাগ রেখে যাবে। উত্তেজনায় ভরপুর না হলে জয়ের মূল্যই বা কী!

এ কারণেই হয়তো ওভারের শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষায় রেখেছিলো বাংলাদেশ।

মাহমুদউল্লাহর বড় অবদান মানতেই হবে। তার কারণে বাংলাদেশ মুখ দেখল স্মরণীয় আরেকটির জয়ের। ২ উইকেটের জয়ে ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ।

শুরু থেকেই গুটি গুটি পায়ে এগুচ্ছিল বাংলাদেশ।

১২ ওভার শেষেও প্রয়োজনীয় রান রেট থেকে পিছিয়ে পড়েনি বাংলাদেশ, হাতে ছিলো ৮ উইকেট। ম্যাচে নিরঙ্কুশ ফেবারিট তো বাংলাদেশ! কিন্তু কীভাবে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়তে হয় সেটাই দেখিয়ে দিলেন তামিম-মুশফিকেরা।

মাত্র ১৫ বলের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ৯৭ রান থেকে হঠাৎ করেই ৫ উইকেটে ১০৯ বাংলাদেশ।

অথচ ১২ ওভার পর্যন্ত শুধু সুখবরই ঘোরাঘুরি করছিল বাংলাদেশ দলের চারপাশে। মাত্র তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এক হাজার ছুঁয়েছেন মুশফিক। অপর প্রান্তে এই মাইল ফলকে সবার আগে পৌঁছা তামিম। ১২ ওভার শেষে দলের স্কোর ২ উইকেটে ৯৫। ইনিংসের ওই অবস্থায় শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ৬৮ রান। ২৭ রানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ তো জয়ের আশা করতেই পারে।

কভার দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে মুশফিক ফেরার পরও আশা হারায়নি বাংলাদেশ, তামিম যে ছিলেন। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান ইতিহাস সৃষ্টি করা সেই ইনিংসের পর আর কখনো ফিফটিও করতে পারেননি। আজ সে দুঃখটাও মিটল। ৪১ বলে ফিফটি করা তামিম কিনা আউট পরের বলেই! কোনো চার ছক্কা না মেরে ১০ রান করা সৌম্য আউট ৪ বল পরেই। তবে কি পথ হারাল বাংলাদেশ?

৩১ বলে ৫১ রানের সমীকরণ মাথায় নিয়ে মাঠে নামলেন সাকিব আল হাসান। বিদায় নিলেন দলকে ১২ বলে ২৩ রানের সমীকরণে। এর মাঝে ৯ বলে ৭ রানই করতে পেরেছেন সাকিব। দলকে জেতানোর সব দায়িত্ব পড়ল সিরিজের আগের তিন ম্যাচের অধিনায়কত্ব করা মাহমুদউল্লাহর কাঁধেই পড়ল।

মাহমুদউল্লাহও চেষ্টা করলেন তাঁর সর্বোচ্চ।

শেষ ৪ বলে বাংলাদেশ ১২ রান নিতে পারবে না বলেই যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করেছে টাইগাররা, এমন সমালোচনাও হয়তো হতে পারত।

এমন পরিস্থিতিতে মাঠের কিনারে চলে আসেন দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন। সঙ্গে বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমের সবাই। সুজন বুঝিয়ে শুনিয়ে মাহমুদউল্লাহদের ম্যাচটা শেষ করে আসতে বলেন। শেষ গল্পটা তো সবারই জানা। এমন এক ম্যাচ মাহমুদউল্লাহর অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে জিতেই ফাইনালে উঠে গেছে টাইগাররা।

 

ই-বার্তা/এসএস