বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ই- বার্তা ডেস্ক।।   বিএনপি টানা তিন দফা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে। সাংগঠনিক দুর্বলতার পাশাপাশি মামলা ও গ্রেফতারে নেতাকর্মীদের নাজেহাল অবস্থা- সবমিলে দলটি বর্তমানে চরম দুঃসময় পার করছে।

একই সঙ্গে এই দুঃসময়ে পাশে নেই দলটির দুই কাণ্ডারি- চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ অবস্থায় বর্তমান সংকট কাটিয়ে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে ঘুরে দাঁড়ানোই বিএনপির এখন মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এমন পরিস্থিতিতেই আজ উদযাপিত হচ্ছে বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭৮ সালের এই দিনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। দলীয় কার্যালয়ে আজ ভোরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির নেতাকর্মীরা শেরেবাংলা নগরে প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করবেন। বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা হবে। সারা দেশে সব ইউনিট বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কাল সোমবার রাজধানীসহ সারা দেশে র‌্যালি করবে বিএনপি।

এজন্য ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতিও নিয়েছে দলটি। আশপাশের জেলা থেকে ঢাকার র‌্যালিতে অংশ নিতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে দলের নেতাকর্মী, সমর্থক ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করেন, নেতাকর্মীদের মাঝে আস্থা ও মনোবল ফিরিয়ে আনতে সঠিক ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। সুবিধাবাদীদের বাদ দিয়ে যোগ্য ও ত্যাগীদের সামনে এনে দ্রুত দল পুনর্গঠনে হাত দেয়ার পরামর্শ দেন তারা। তাদের মতে, প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন সময়ে বিপর্যয়ে পড়ে দলটি। কিন্তু বারবারই তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। এবারও দলটি ঘুরে দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা তাদের। কারণ এদেশের লাখ লাখ তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থক জাতীয়তাবাদী শক্তির সঙ্গে রয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপির সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। প্রথমে উচিত দলকে সুসংহত করা। জিয়াউর রহমানের আদর্শে সবাইকে উজ্জীবিত করা এবং ওই যৌক্তিকতায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করা। দলকে সংঘবদ্ধ করা। বিএনপির কিছু ভুলও রয়েছে উল্লেখ করে দলটির এই নীতিনির্ধারক বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শ থেকে দূরে থাকা বিএনপির মারাত্মক ভুল। এছাড়া একতাবদ্ধ না হওয়া এবং জনগণকে সম্পৃক্ত না করাটাও বিএনপির রাজনীতির নেতিবাচক দিক। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি একা এ অবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনতে পারবে না। সব রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে সর্বদলীয় ঐক্যের মাধ্যমে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, স্বাধীনতার পক্ষের এ দলটি যুদ্ধাপরাধীর দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করায় রাজনৈতিকভাবে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। যে কোনো বিষয়ে প্রতিপক্ষ বারবার জামায়াতকে সামনে এনে বিএনপিকে ধরাশায়ী করছে। দেশের জনগণের বড় একটি অংশও বিএনপির এই কৌশল পছন্দ করছে না। তাই এখন সময় এসেছে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ত্যাগ করে বিএনপিকে আপন শক্তিতে বলীয়ান হতে হবে। তাহলে দেশের সুশীলসমাজসহ বড় একটি অংশের সমর্থন বিএনপি পাবে।