বিএনপি রাজপথে থাকার ঘোষণা দিলেও, মাঠে পাওয়া যায়নি কোনো নেতাকর্মীকেই

ই-বার্তা ডেস্ক ।।  গতকাল রোববার সমাবেশ করল বিএনপি ।  ওই সমাবেশে দলটির শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ সবাবেশ থেকেই বিএনপির পয়লা অক্টোবর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

 

কিন্তু আজ মাঠে পাওয়া যায়নি বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকেই।দলটির সিনিয়র নেতাদেরও দেখা মেলেনি । বিএনপি ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, আগের দিনের জনসভা করে নেতারা সবাই ক্লান্ত। পার্টি অফিসেও শীর্ষ নেতাদের তেমন একটা দেখা যায়নি। বক্তব্য ও সংবাদ সম্মেলন করে নিয়মিত মিডিয়ায় থাকেন- বিএনপির এমন নেতাদের মধ্যে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকেই শুধু পার্টি অফিসে পাওয়া গেছে। বিএনপি ঘোষণা দিয়ে মাঠে না থাকলেও আজ সকাল থেকেই মাঠে দেখা গেছে আওয়ামী লীগকে।

 

আওয়ামী লীগের নেতারা  রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আজ জনসংযোগ চালিয়েছেন। জনসংযোগ হয়েছে রাজধানীর বাইরেও। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের বিস্তারিত তুলে ধরে জনগণকে আবার এই সরকার আনার আহ্বান জানিয়েছেন দলের নেতারা। এসব জনসংযোগের মধ্যে দিয়ে রাজধানীর রাজনীতির মাঠ মোটামুটি গরম রেখেছে আওয়ামী লীগ। আর ধারাবাহিক কর্মসূচির কারণে চাঙ্গা আছে নেতাকর্মীরাও।

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন,

আমরা জনসংযোগ অব্যাহত রাখবো। এখন থেকে নিয়মিত ভাবেই রাজধানীজুড়ে জনসংযোগসহ আওয়ামী লীগের সভা সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়। এই রায় নিয়ে বিএনপি জামাত দেশে একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। সেই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্যই মাঠ দখলে রাখতে চান তারা।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়কে বাংলাদেশের রাজনীতির একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এমন ধারণা থেকেই আগামী ১০ অক্টোবর রাজধানীতে বড় আকারের শো ডাউনের কথা ছিল বিএনপিরও। সর্বশেষ বড় পরিসরে বিএনপি শো-ডাউন করেছে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় হয়।

 

মামলার আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে নেওয়ার মুহূর্তে শো-ডাউন করে বিএনপি। তবে এরপরও পুলিশি প্রহরায় বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতে নেওয়া হয়। আদালতের রায়ে দণ্ডিত হলে ওই দিন থেকেই কারাগারে আছেন বেগম জিয়া। চলতি মাসের তাঁর কারাবাসের ৮ মাস পূরণ হচ্ছে। বিএনপি ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, ১০ অক্টোবরে ৮ ফেব্রুয়ারি চেয়েও বড় শো-ডাউন করতে চেয়েছিল বিএনপি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিএনপির নূন্যতম শো-ডাউন করতে পারবে কিনা তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে।

 

সম্প্রতি জামাতকে একপ্রকার ত্যাগ করেই ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দেয় বিএনপি। বিএনপির নেতারা বলেছিলেন, বৃহত্তর স্বার্থেই তারা ঐক্য প্রক্রিয়ায় যাচ্ছেন এবং ত্যাগ স্বীকার করছেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিএনপি জামাত ত্যাগ না করলেও দলের নেতাদের মতিগতির কারণে জামাত-বিএনপির মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই সম্প্রতি বিএনপির কর্মসূচিতে জামাতের কর্মীদের তেমন একটা দেখা যায় না।

 

গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশেও জামাতের কর্মীদের তেমন চোখে পড়েনি। জামাতের নেতারা আক্ষেপ করে বলেন,

আমরা জীবন দেই, আমরা রাস্তার আন্দোলন করি, আর আমাদেরই পাত্তা নাই।

 

অপরদিকে, বিএনপির মাঠ গরম করার কর্মীরা, যাঁদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মামলা আছে, সেই মামলাগুলো আবার সচল করছে সরকার। এর ফলে গ্রেপ্তার হচ্ছেন তাঁরা। এরই মধ্যে মামলার আসামি এমন অনেক বিএনপির নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। আর গ্রেপ্তারের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন অনেকে। আগামী শো-ডাউনে তাঁদেরও মাঠে পাচ্ছে না বিএনপি।

 

 

অপরদিকে, ১৪ দলের সমাবেশ এবং সর্বশেষ আজ দিনব্যাপী রাজধানীর বিভিন্ন অংশে জনসংযোগের মধ্যে দিয়ে গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী জুড়ে নানা সমাবেশ ।   ঢাকার নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই নিয়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর রাজধানী ব্যাপী কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে ঢাকায় বিএনপির কোনো কর্মসূচি করা কঠিন হয়ে পড়বে।

 

আওয়ামী লীগ মনে করছে, ১০ অক্টোবর রায় হয়ে গেলে, রাজনৈতিক গতিপথ স্পষ্ট হবে। ওই সময় বড় কিছু করতে না পারলে নির্বাচনের সড়কই ধরবে বিএনপি।

 

 

 

ই-বার্তা / ডেস্ক