বিজয় দিবসে সবংর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা তাহিরপুর মুক্তিযোদ্ধাদের

ই-বার্তা ডেস্ক।।  সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিজয় দিবসে সবংর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। বুধবার উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে তাহিরপুর মুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় এ ঘোষণা দেন তারা।  

একাওরের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৫নং সেক্টরের ট্যাকেরঘাট (বড়ছড়া) সাব সেক্টরের অসংখ্য বীরের স্মৃতি বিজরিত ট্যাকেরঘাট‘মুক্তির মঞ্চ’সহ সরকারি কয়েক কোটি টাকার জমি পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর দোসর স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সন্তান শামীম আহমদ তালুকদার গংদের দখল হতে দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে এমন ঘোষণা দেন বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৫নং সেক্টরের ট্যাকেরঘাট (বড়ছড়া) সাব সেক্টরের বীরমুক্তিযোদ্ধাগণের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে ঠিকতে না পেরে ৪ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী তাহিরপুর ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এ দিবসটি সামনে রেখে বুধবার তাহিরপুর উপজেলা সদরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিজয় র‍্যালী বের করা হয়। 

র‍্যালী শেষে থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের সামনে উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্ধ, গণমাধ্যমকর্মী ও জনপ্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ তাদের দাবি তুলে ধরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, প্রতিবছর বিজয় দিবসে যথায় তথায় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণকে সবংর্ধনা প্রদান করা হয়।

স্বাধীনতার পরবর্তী সময়কাল হতে প্রতি বছর বিজয় দিবসে মুক্তিতুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত ৫নং সেক্টরের ট্যাকেরঘাট সাব সেক্টরের ‘মুক্তির মঞ্চে’ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণকে সবংর্ধনা প্রদান আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত, পালিত হত জাতীর জনকবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবসসহ বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রীয় দিবস পালন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক সভা সমাবেশ, অনুষ্ঠানমালা। কিন্তু দূর্ভাগ্যজন হলেও সত্যি যে, একাত্তরের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ৫নং সেক্টরের ‘মুক্তির মঞ্চ’সহ কয়েক কোটি টাকার সরকারি সম্পদ দখলে নিয়ে রেখেছেন পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর দোসর স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সন্তান তাহিরপুরের তরং গ্রামের প্রয়াত রাজাকার আব্দুর রউফ তালুকদারের ছেলে শামীম আহমদ তালুকদারসহ বেশ কয়জন প্রভাবশালী।

গত চার বছর ধরে এ দখল বাণিজ্যের বিরুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগপত্র দেয়া হয় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনারের (ভূমি)বরাবর। কিন্তু অদৃশ্য কারণে দখল হওয়া সরকারি জমি ও ‘মুক্তির মঞ্চ’ উদ্ধার কেবল নোটিশেই সীমাবদ্ধ রেখেছে প্রশাসন।

ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু