বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিশ্বের ১৩১টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ১ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে।

শুক্রবার সকাল ১১টা ২৭ মিনিটে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেসে দেয়া আপডেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।সংবাদমাধ্যমটির খবর অনুযায়ী, ইরানে করোনাভাইরাসে নতুন করে আরও ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে আরও ১ হাজার ২৮৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট ৫১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৬৪ জনে।

এদিকে ভারতে করোনাভাইরাসে প্রথম মারা গেলেন ৭৬ বছরের এক বৃদ্ধ। কর্ণাটকের ওই বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।চীনে প্রকোপ কমে গেলেও দেশটির বাইরে দুই সপ্তাহে করোনা ১৩ গুণ বেড়ে যাওয়ায় বুধবার পৃথিবীব্যাপী মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আর চীনের বাইরে ইতালিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। দেশটিতে ১৫ হাজার ৪৬২ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং ৮২৭ জন মারা গেছে। এরপর ইরানে নয় হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং ৩৫৪ জন মারা গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় সাত হাজার ৮৬৯ জন আক্রান্ত এবং ৬৬ জন মারা গেছে।

ফ্রান্সে দুই হাজার ২৮১ জন আক্রান্ত এবং ৪৮ জন মারা গেছে। স্পেনে দুই হাজার ২৭৭ আক্রান্ত এবং ৫৫ জন মারা গেছে। জার্মানিতে এক হাজার ৯৬৬ জন আক্রান্ত এবং তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে এক হাজার ৩২২ জন আক্রান্ত এবং ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন ও এনডিটিভির।করোনার প্রকোপে ইতালি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। দেশটিতে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩১৪ জন।

দক্ষিণ কোরিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে সাত হাজার ৮৬৯ জনে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে মৃতের সংখা দাঁড়িয়েছে ৬৬।আড়াই মাস আগে চীনের উহান থেকে উৎপত্তি এই করোনাভাইরাস এখন ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে মহামারি আকার ধারণ করেছে।

এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ কড়াকড়ি আরোপ করতে থাকায় দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বিশ্ব যোগাযোগ। একের পর এক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা আসছে নানা দেশ থেকে। কোথাও কোথাও খেলা চলছে গ্যালারি শূন্য রেখে।

ইতালি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, পর্তুগালসহ বেশ কয়েকটি দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিং মল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ইন্সটিটিউট বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন শহরে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই ভাইরাস ক্রীড়াঙ্গনেও প্রভাব ফেলেছে।

ইউরোপে সব ধরনের ভ্রমণ স্থগিত ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও লেবানন। ভারতে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করতে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, বেসরকারি বিমান সংস্থা নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। ভারতে বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিমান সংস্থাগুলো এ ঘোষণা দিয়েছে। যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলাকে ইতিমধ্যেই বিশ্ব থেকে আলাদা করে ফেলার ব্যবস্থা হয়েছে।

এদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী সোফি গ্রেগরি ট্রুডো যুক্তরাজ্য থেকে ঘুরে এসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। স্ত্রী আক্রান্ত হওয়ায় ট্রুডোও চিকিৎসকের পরামর্শে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার ডাটনও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পসহ অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে সাক্ষাতের একদিন পরেই ব্রাজিলিয়ান কর্মকর্তা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারোর প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা ফেবিও ওয়াজনগার্টেন।