বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা অপরিহার্য

ই-বার্তা ।। থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ। এ রোগের সঠিক চিকিৎসা না হলে রোগী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই মারা যায়। থ্যালাসোমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর রক্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় না। ফলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা যায়।

 

দেশে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। বিশ্বে এর সংখ্যা এক লাখ। সাধারণত শিশু জন্মের এক দুই বছরের মধ্যেই এ রোগ ধরা পড়ে।চিকিৎসকদের মতে, দেশের ১০ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করছে। এদের মধ্যে ৪ শতাংশ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। বাঁচার জন্য এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিতো রক্ত নিতে হয়।

 

মঙ্গলবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসের প্রতিপাদ্য, ‘বিয়ের আগে পরীক্ষা করলে রক্ত, সন্তান থাকবে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত’।দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (৭ মে) থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন এক সেমিনারের আয়োজন করে। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিয়ের আগে বাধ্যতামূলক রক্ত পরীক্ষার দাবি জানানো হয়।

 

থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারের মূল প্রবন্ধে, থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মো. আবদুর রহিম বলেন, সন্তানের এ রোগ তখনই হতে পারে যখন স্বামী-স্ত্রী উভয়েই এ রোগে আক্রান্ত থাকেন। যদি একজনও সুস্থ থাকে তবে সন্তানের এ রোগের আশঙ্কা থাকে না।তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৭ লাখ বিয়ে হয়। আর বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ঝুঁকিমুক্ত দম্পতি নির্ণয় করা সম্ভব।

 

সেমিনারে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার বিষয়ে সরকারিভাবে ব্যাপক প্রচারণা চালালে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। আর এটি বাধ্যতামূলক করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ আবশ্যক।এ সময় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের ওষুধে ভর্তুকি দেয়ার আশ্বাসও দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সচিব আকতারী মমতাজ ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বক্তব্য দেন।

 

এদিকে সোমবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতাল গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। সেখানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় পরামর্শক বেনজীর আহমেদ প্রধান অতিথি ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং থ্যালাসেমিয়া রোগী ও তাদের অভিভাবকেরা। হাসপাতালের সভাপতি ওমর গোলাম রাব্বানী এতে সভাপতিত্ব করেন। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল হোসেন।

 

 

 

ই-বার্তা/ডেস্ক