বীরপ্রতীক কাকন বিবিকে নিয়ে সিনেমা হচ্ছে

বিনোদন ডেস্ক ।।  স্বাধীনতাযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয়া বীরপ্রতীক মুক্তিযোদ্ধা সুনামগঞ্জের প্রয়াত কাকন বিবির জীবনী নিয়ে এবার নির্মাণ করা হচ্ছে চলচ্চিত্র।

চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করছেন পরিচালক শহীদুল হক খান। আর এ সিনেমায় কাকন বিবির চরিত্রে দেখা যাবে জনপ্রিয় অভিনেত্রী সিমলাকে।মঙ্গলবার বিএফডিসিতে চলচ্চিত্রটির মহরত অনুষ্ঠিত হয়। চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে অভিনেত্রী সিমলা বলেন, এ সিনেমাটিতে মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান তুলে ধরা হবে। আর সেই চরিত্রটিই আমি করছি। বিষয়টি খুব ভালো লাগছে। আমি এমনিতেই কাজ একটু কম করে থাকি। তবে কাকন বিবির মতো কাজের জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষায় থাকি।তিনি বলেন, এই সিনেমায় তিনটি লুকেশনে দর্শকদের সামনে উপস্থিত হবো। এতে প্রথমে আমি একজন কিশোরী, তারপর যুবতী এবং শেষে আমি বৃদ্ধ কাকন বিবি। আশা করছি, দর্শক নতুন কিছু দেখবেন।চলচ্চিত্রটির নির্মাতা শহীদুল হক খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক ভূমিকা ছিল। কিন্তু চলচ্চিত্রের পর্দায় খুব ভালোভাবে তা তুলে ধরা হয়নি বলে মনে করছি।কাকন বিবির মতো অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধা আছেন, যারা দেশকে স্বাধীন করার জন্য কাজ করেছেন। কখনো কখনো পুরুষের চেয়ে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন নারীরা। এ সিনেমার মাধ্যমে নারীদের ভূমিকা তুলে ধরতে চাই। শিগগিরই এ সিনেমার শুটিং শুরু হবে বলে জানান এ ছবির নির্মাতা।সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলতি বছরের ২১ মার্চ ১০৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

তার স্বামী সাঈদ আলীও প্রয়াত। বীর প্রতীক কাকন বিবির গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার জিরারগাঁও গ্রামে।১৯৭১ সালে তিনদিন বয়সী মেয়ে সখিনাকে রেখে যুদ্ধে চলে যান কাকন বিবি। জুনে পাকিস্তানী বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন তিনি। বাঙ্কারে আটকে দিনের পর দিন তাকে নির্যাতন করে পাক সেনারা। ছাড়া পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর কাছে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নেন তিনি। রহমত আলীর দলে সদস্য হয়ে সশস্ত্রযুদ্ধ করেন তিনি। একইসঙ্গে চালিয়ে যান গুপ্তচরের কাজ।১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে টেংরাটিলাসহ ৯টি সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। এসময় কয়েকটি গুলি তার শরীরে বিদ্ধ হয়। টেংরাটিলা যুদ্ধের পর আমবাড়ি, বাংলাবাজার, টেবলাই, বালিউরা, মহব্বতপুর, বেতুরা, দুর্বিনটিলা, হায়দার টিলাসহ সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন কাকন বিবি।মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি কোনো স্বীকৃতি পাননি। পারিবারিক টানাপোড়েনে তিনি শ্রমজীবীর কাজ ও ভিক্ষাবৃত্তিও করেছেন।১৯৯৬ সালে তার বীরত্বগাথা জীবন কাহিনী সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে সংবর্ধনা দিয়ে বিশেষ ‘বীরপ্রতীক’ খেতাব ঘোষণা করা হয়েছিল।

 

 

 

ই-বার্তা // ডেস্ক