বৈরুত বিস্ফোরণ, ৩০ দিন পরেও ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রাণের সন্ধান!

বৈরুত বিস্ফোরণের ঠিক এক মাসের মাথায় ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত কারও অস্তিত্বের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে উদ্ধারকারী টিম জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার অবিশ্বাস্য এমন সম্ভাবনার খবরে নড়েচড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। আবারও পুরো বিশ্বের নজর এক যোগে বৈরুতের দিকে। সত্যিই কি এখনো জীবিত কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব!

৪ আগস্ট স্মরণকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় লেবাননের রাজধানী বৈরুত। এ ঘটনায় প্রায় দুইশ মানুষের প্রাণহানি ঘটে, আহত হন ৬ হাজারের বেশি।বৈরুত বন্দরের একটি গুদামে মজুত থাকা বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে অনেক দূরের এলাকাও। ভূমধ্যসাগরের অপর পাড়ের সাইপ্রাসে সৃষ্টি ভূকম্পনের।

এ ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো ধ্বংসস্তূপ সরানো সম্ভব হয়নি। এ কাজে লেবানন সরকারকে সহযোগিতা করছে দুর্যোগ মোকাবিলায় চিলির বিশেষ উদ্ধারকারী টিম টপোস চিলি।স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির একজন সদস্য আলজাজিরাকে জানান, স্ক্যানিং মেশিনে জীবিত মানুষের নাড়ির স্পন্দন ও শ্বাস প্রশ্বাসের লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন তারা।

বিস্ফোরণে ধসে পড়া ভবনের নিচে এখনো কেউ জীবিত আছে বলে ধারণা করছেন তারা।টপোস চিলি সদস্য আরও বলেন, ‘খুব সম্ভবত এটি একটি শিশু হতে পারে’। তার টিমও বলছে, ‘অন্তত একটা প্রাণের অস্তিত্ব সেখানে রয়েছে।’

কানাডাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার বিস্ফোরণ স্থলের ৪০০ মিটার দূরে ধসে পড়া একটি ভবনের কাছে অনুসন্ধান চালাচ্ছিল চিলির স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধারকারী সংস্থাটি। তখন তাদের সঙ্গে থাকা স্নিফার কুকুর (শনাক্তকারী কুকুর) কিছু একটা আবিষ্কারের ইঙ্গিত দেয়।

এরপর সেখানে স্ক্যানিং মেশিন বসিয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে সেন্সর পাঠালে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা দেখতে পান তারা।উদ্ধারকারী টিমটির সঙ্গে কাজ করা এনজিও লাইভ লাভ লেবাননের সদস্য এডওয়ার্ড বিতার জানান, ধ্বংসস্তূপের নিচে তাদের সেন্সরে প্রতি মিনিটে ১৮ বার শ্বাস প্রশ্বাসের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি খুব একটা আশাবাদী না হতে। কিন্তু যদি কাউকে পেয়ে যাই, এটি হবে অলৌকিক।’তাকে উদ্ধার করার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন টপোস চিলির সদস্যরা।এর আগে ২০১০ সালে হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ২৭ দিন পর এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল টপোস চিলি।

বিশ্বের বড় বড় দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজে সহায়তা দিয়ে থাকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। তাদের রয়েছে বিশেষ দক্ষতার উদ্ধারকারী কর্মী ও আধুনিক প্রযুক্তি।২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমা অঞ্চলে নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার কাজে যুক্ত ছিল টপোস চিলি।