মসজিদের দান বাক্সে পাওয়া গেলো কোটি টাকা !

ই-বার্তা ।।  কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক থেকে এবার ৮৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।

শনিবার বিকালে গণনা শেষে বিপুল পরিমাণ দানের এই টাকার হিসাব পাওয়া যায়। বিপুল পরিমাণ এই নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দান হিসেবে অনেক স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। মাত্র ৮৪ দিনে এই টাকা দান পাওয়া গেছে। সে হিসেবে প্রতিদিন মসজিদটিতে এক লাখেরও বেশি টাকা মানুষ দান করেন।

এর আগে সর্বশেষ গত ৬ই জানুয়ারি মসজিদের ৫টি দানসিন্দুক খুলে গণনা করে সর্বোচ্চ এক কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। চার মাস ১০দিনে তখন ওই টাকা দান হিসেবে পাওয়া গিয়েছিল।

এর আগে গত ২৬শে আগস্ট মসজিদের দানসিন্দুক খুলে গণনা করে এক কোটি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত ৬ই জানুয়ারি সর্বশেষ দানসিন্দুক খোলার ৮৪ দিন পর শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়। দান সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা। টাকা গণনায় মসজিদ মাদরাসার ৬০জন ছাত্রশিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ অংশ নেন।

টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হোসাইন, সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদ, সিন্দুক খোলা কমিটির সদস্য সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলুসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ। টাকা গণনার এই এলাহী কাণ্ড নিজ চোখে অবলোকন করতে মসজিদে ছুটে যান প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আ.ন.ম নৌশাদ খান, জেলা ক্যাব সভাপতি আলম সারোয়ার টিটুসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজন।

পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক খুললে প্রতিবারেই বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া যায়। আগে চার মাস অন্তর অন্তর দানসিন্দুক খোলা হলেও দানসিন্দুকে দেয়া টাকা নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করতে এবার ৮৪ দিন পরই দানসিন্দুক খোলার উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানসিন্দুকগুলোতে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন। কথিত আছে, খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনোবাঞ্চা পূর্ণ হয়। সেজন্য দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন।

জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে এ মসজিদটির অবস্থান। দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদ জানান, পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খুলে এবার ৮৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। এছাড়া সৌদী রিয়াল, বাহরাইনের দিনার, অ্যামেরিকান ডলার, ইথিওপিয়ান বির ছাড়াও ভাল পরিমাণের স্বর্ণালঙ্কার পাগলা মসজিদের দান বাক্সে জমা পড়েছে। 

ই-বার্তা/এস