মাছ দিয়ে রূপচর্চা, হতে পারে ভয়ঙ্কর!

ই-বার্তা ।।  ফিশ ফুট স্পা এখন প্রায় সব পার্লারেই থাকে। প্রায় ৩০ মিনিট মাছের ঝাঁকের মধ্যে পা ডুবিয়ে বসে থাকলেই হল। শরীরের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। মন কিছুটা ঝরঝরেও হয়। পাশাপাশি পায়ের ত্বকও মসৃণ হয়ে যায়। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এই স্পা করার ফলে হেপাটাইটিস ও HIV-র মতো রোগ হতে পারে।

ফিশ ফুট স্পা এমন একটা প্রক্রিয়া যেখানে আপনাকে একটা জায়গার (সেটা গামলা বা যে কোনও পাত্র হতে পারে) মধ্যে পা ডুবিয়ে বসে থাকতে হবে। আর তাতে ছাড়া থাকবে ছোট মাছ। সেই মাছগুলি আপনার পায়ের থেকে মৃত কোশ, নোংরা খুবলে খেয়ে নেবে। তাতে অবশ্য সুড়সুড়ি ছাড়া আর বিশেষ কিছুই অনুভূত হয় না। তবে এই প্রক্রিয়ায় রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা যে একেবারেই থাকে না তা নয়। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের এই স্পা থেকে হেপাটাইটিস ও HIV-র মতো রোগ হতে পারে।

যে পাত্রটিতে পা ডুবিয়ে রাখা হয় সেই জলের মধ্যেই ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া থেকে যায়। অনেক সময় একজনের ব্যবহৃত জল আর একজনকে দেওয়া হয়। ধরুন কোনও ব্যক্তির শরীরে হেপাটাইটিস ও HIV-র মতো ভাইরাস রয়েছে। আর তিনি ফিশ ফুট স্পা করেছিলেন। সে সময় কোনও কারণে যদি তাঁর পায়ে রক্তক্ষরণ হয়,তাহলে সেই রক্ত জলে মিশে যায়। এরপর অন্য কোনও ব্যক্তি সেই জল ব্যবহার করেন, তাহলে তাঁর শরীরেও সেই ভাইরাস ঢুকে যায়। তবে শুধু হেপাটাইটিস বা HIV-ই নয় একইভাবে আরও অনেক ভাইরাসও শরীরে ঢুকে যেতে পারে।

তবে এই স্পা থেকে হেপাটাইটিস ও HIV-র মতো রোগ সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কমই থাকে। কারণ মাছের মধ্যে কখনওই HIV-ভাইরাস বাসা বাঁধতে পারে না। তাই সে এই ভাইরাস বহনও করতে পারবে না। এছাড়া যাঁর শরীরে এই ভাইরাস রয়েছে তাঁর পায়ে বড় কোনও ক্ষত থাকতে হবে। যার থেকে মাছের কামড়ে হালকা রক্ত বের হতে পারে। পাশাপাশি যে ব্যক্তি তারপর ওই জলে পা ডোবাবেন সেই ব্যক্তিরও পায়ে ক্ষত থাকতে হবে। না হলে রক্তের মাধ্যমে সেই ভাইরাস শরীরে ঢুকতে পারবে না। আর তাছাড়া জলের মধ্যে ওই ভাইরাসের প্রভাব খুব বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। তাই রোগ সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনাও বেশ খানিকটা কম থাকে।

কিন্তু, রোগ কোথা দিয়ে কীভাবে চলে আসে তা সব সময় বলা যায় না। তাই স্পা কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নিজেদেরও এ বিষয় একটু সচেতন থাকা দরকার। যে আসছে তাদের কোনও রোগ আছে কি না তা বিশদে জেনে নিন। তাঁর পায়ে কোনও কাটা বা ক্ষত রয়েছে কি না তা দেখে নিন। আর একজন স্পা করার পর মনে করে সেই জল পরিবর্তন করবেন। স্পা কর্তৃপক্ষ জল সঠিকভাবে পরিবর্তন করছে কি না সেটা নিজদের দেখে নেওয়া উচিত।