মাশরাফির কিসের এত অভিমান?

ই-বার্তা ।। মাশারাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক আবগের নাম। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ভালবাসার নাম। ক্রিকেট যেমন বাংলাদেশের আবেগের অনেকটা জুড়ে রয়েছে, তেমনই আবেগ জড়িত মাশরাফি নামটার মধ্যেও।

 

আর আবেগটা থাকবেই বা না কেনো? মাশরাফিই এদেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। পায়ে সাতবার সার্জারি করেও দমে যাননি নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত ম্যাশ। ভীষণ ব্যাথা নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে বাইশ গজে হিংস্র বাঘের ন্যায় লড়াই করে গেছেন। অথচ যেকোন ধরণের আঘাতে যেকোন মুহুর্তে বাম পা পঙ্গু হয়ে যাওয়ার শঙ্কা আছে প্রতি মুহুর্তেই।

 

‘মুক্তিযোদ্ধারা পায়ে গুলি নিয়েও যুদ্ধ করে যেতে পারলে আমি কেনো সামান্য অপারেশন নিয়ে বোলিং করতে পারবো না।’ পায়ের ব্যাথা ভুলতে নিজেকে স্বান্তণা দেন এই কথা বলে। তাঁর নেতৃত্ব গুণেই বাংলাদেশ জয়ের ধারায় ফিরেছে। বিশ্ব ক্রিকেটে মাথা উঁচু করে লড়াই করছে। কুড়িয়েছেন সম্মান, দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনে পেয়েছেন এদেশের মানুষের ভালবাসা।

 

এত এত ভালোবাসা সম্মান পেছনে ফেলে ক্যারিয়ারের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যখন নিজের সেরা পারফর্ম করে চলেছেন ঠিক তখনই আজকের এই দিনে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অজানা এক অভিমানে অবসরে চলে যান মাশরাফি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচে মাশরাফির অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ জয় পায় ৪৫ রানে। সিরিজে আনে ১-১ এ সমতা।

 

এখনও খেলে চলেছেন আন্তর্জাতিক ওয়ানডে এবং ঘরোয়া লিগগুলোতে। বুড়ো মাশরাফিকে নিয়ে সমালচনাও কম হয়নি। মাশরাফি বুড়ো হয়ে গেছেন, খেলতে পারেন না, বলে ধার নেই, উইকেট পান না এসব নানারকম কথাই উঠেছে একটা সময়। কথা উঠেছে তাঁর নেতৃত্ব নিয়েও অথচ তাঁর নেতৃত্বের ধারেকাছে কোন সাবেক কিংবা বর্তমান নেই।

 

বয়স ৩৪ পেরুলেও এখনো একজন তরুণ ক্রিকেটারের মত পারফরম করে চলেছেন বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়ক। ভেঙ্গে চলেছেন একের পর এক রেকর্ড, গড়ছেন নতুন ইতিহাস।

 

গতকাল শেষ হওয়া ঢাকা প্রিয়িমায় লীগে তাঁর দল আহাবনী চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বুড়ো বয়সে রেকর্ড ভেঙ্গে মাশরাফি ১৬ ম্যাচে শিকার করেছেন ৩৯ উইকেট। যা তালিকায় সর্বোচ্চ। এরমধ্যে ৫ উইকেট ২ ম্যাচে ও ৪ উইকেট ২ ম্যাচে। ব্যাট হাতেও অবদান রয়েছে ম্যাশের। ব্যাট হাতে ১২ ইনিংসে ১৮.৫৪ গড়ে ১০৭.৩৬ স্ট্রাইক রেটে ৬ চার ও ১৪ ছক্কায় ২০৪ রান করেছেন। দুর্দান্ত রেসের ঘোড়ার মত ছুটে চলেছেন।

 

মাঝে একবার গুঞ্জন উঠেছিল মাশরাফি ফিরে আসবেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে। বিসিবি সভাপতি পাপন বলেছিলেন, তিনি বললে মাশরাফি ফিরবেন টি-টোয়েন্টিতে। ভক্তরা আশায় বুক বাধে মাশরাফিকে আবার ক্রিকেটের ছোট ফরম্যাটে বল হাতে আগুন ঝড়ানো দেখবে বলে। কিন্ত সেই আশায় গুড়েবালি ঢেলে ম্যাশ জানিয়ে দেন তিনি ফিরবেন না।

 

টি-টোয়েন্টি ছাড়ার সেই অভিমান থেকে এখনো সরে আসেননি ম্যাশ। কিসের এত অভিমান মাশরাফির? অবসর ভেঙ্গে কি আর কখনোই ফিরবেন না টি-টোয়েন্টিতে?

 

 

ই-বার্তা/ডেস্ক