মিরপুরে হাইড্রোজেন বেলুন বিষ্ফোরণে ৫ শিশুর মৃত্যু

ই-বার্তা ডেস্ক।।  রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১১ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় শিয়ালবাড়ী বস্তির সামনে হাইড্রোজেন গ্যাস রি-অ্যাক্টর বিস্ফোরিত হয়ে ৫ শিশু প্রাণ হারিয়েছেন।   

বুধবার বিকাল ৪টার দিকে একটি রিকশাভ্যানে করে গ্যাস বেলুন বিক্রি করা হচ্ছিল। শখের বেলুন কিনতে রিকশাভ্যানটিকে ঘিরে ধরেছিল প্রায় ২০টি শিশু। বেলুনওয়ালার চারদিক ঘিরে শিশুদের আনন্দ, হইহুল্লোড়। গ্যাস দিয়ে ফোলানো রঙিন বেলুন উড়ে যাচ্ছিল আর বেলুনটি সুতা দিয়ে শিশুর হাতে বাঁধা ছিল। ভ্যানটিতে হঠাত্ প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ। মুহূর্তে আনন্দ-হুল্লোড় শোক, আতঙ্ক, চিত্কারে পরিণত হয়। চারদিকে ছড়িয়ে আছে রঙিন বেলুন আর শিশুদের ছিন্নভিন্ন রক্তাক্ত দেহ।

এ ঘটনায় ১৭ শিশুসহ ২০ জন আহত হয়। নিহত হয়েছেন ৫ জন। নিহতরা হলো রুবেল (১১), রমজান (৮), শাহীন (৯), নুপুর (৯) ও ফারজানা (৬)। তবে বেলুনবিক্রেতার পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন জুয়েল (৩০) ও সোহেল (২৫) নিজেদের রিকশাচালক বলে দাবি করেছেন। 

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের লাশঘরের সামনে চিত্কার করে কাঁদছিলেন নূর ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি একজন রিকশাচালক। তার চোখের সামনে ১১ বছরের শিশু রুবেল ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। 

রূপনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপক কুমার দাস বলেন, গ্যাস বেলুন বিক্রির রিকশাভ্যান দেখে শিশুরা সেখানে ছুটে যায়। নিহত শিশুদের লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পরপর জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধারকাজ চালায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পাঁচ শিশুর লাশ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠান। ঢাকা মহানগর অ্যাম্বুলেন্স অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে পাঁচ-ছয়টি অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া জানান, চারজনকে মৃত অবস্থায় এই হাসপাতালে আনা হয়। আহতদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।  

ই-বার্তা/সালাউদ্দিন সাজু