মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে রায় মন্ত্রীর কাছে জেনেছেন প্রধানমন্ত্রী

ই-বার্তা।।  মঙ্গলবার গণভবনে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় শেখ হাসিনা বলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সরকারি চাকরিতে কোটা থাকবে না ঘোষণা দেয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে রায়ের কথা প্রধানমন্ত্রী জেনেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে।

 

মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ইলেকট্রনিক ট্রান্সফার পদ্ধতিতে সরাসরি তাদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।এই ‍সুবিধা প্রথম পাচ্ছেন কক্সবাজারের মুক্তিযোদ্ধারা। সারাদেশের সব মুক্তিযোদ্ধাই ধীরে ধীরে এভাবে তাদের ভাতা পাবেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারগুলো কী অবস্থায় পড়েছিল, তার বর্ণনার পাশাপাশি তিনি ক্ষমতায় আসার পর কী কী সুবিধা দিয়েছেন, সেটা তুলে ধরেন। কথা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে।সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে প্রথম আন্দোলনের চেষ্টা হয় ৯০ দশকে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা কোটার আওতায় তাদের ছেলেমেয়েদেরকেও আনে। এরপর স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের ছাত্র সংগঠন শিবিরের অনুসারীরা এই কোটা বাতিলের দাবিতে নানা কর্মসূচি শুরু করে।

 

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যে আন্দোলন শুরু হয় তাতে কোনো বিশেষ কোটার কথা না বলে কোটা সংস্কারের দাবি সামনে আনা হয়। ৩০ শতাংশ মু্ক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ করে নারী ও জেলা কোট, পাঁচ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা এবং এক শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটার বদলে সব মিলিয়ে কোটা ১০ শতাংশ করার দাবি ছিল ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের’।আর গত ৮ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা ঘটনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ১১ এপ্রিল সংসদে ঘোষণা দেন, সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না।গত ২ জুলাই কোটা সংস্কার, বাতিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ১১ জুলাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক জানান, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় আছে। পরদিন সংসদে প্রধানমন্ত্রীও এই রায়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, এখন এই কোটা বাতিল হলে আদালত অবমাননা হবে।

 

২০১২ সালেই হাইকোর্ট এমন রায় দিয়েছিল একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। তখন বলা হয়, যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পদ পূরণ না হয়, তাহলে সে পদ ফাঁকা রাখতে হবে। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর ২০১৫ সালে আপিল বিভাগ জানায়, কোটায় পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী পাওয়া না গেলে সাধারণ মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ দেয়া যাবে।প্রধানমন্ত্রী গত এপ্রিলে সংসদে তার ঘোষণার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের নামে যখন ভিসির বাড়িতে আক্রমণ, তাদের হত্যার প্রচেষ্টা, ভাঙচুর, লুটপাট, একেবারে বেডরুমে ঢুকে গিয়ে লুটপাট করেছে, গয়নাগাটি, টাকা পয়সা সব লুটপাট করেছে, অরাজক পরিস্থিতি, আমি বললাম, ঠিক আছে, কোটা থাকবে না।’‘মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী যখন বললেন, এ নিয়ে হাইকোর্টে একটা রায় আছে, আমি তখন পার্লামেন্টে বললাম, যেহেতু এটা হাইকোর্টের রায়, আমরা তো এটা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করতে পারব না। তারপরেও প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে দিয়ে একটা কমিটি করে দিয়েছি, তারা এটা দেখবে। কিন্তু হাইকোর্টের রায়কে আমরা অবমাননা করতে পারি না।’